ক্ষমা চাওয়ার পর মাফ পেলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা!

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সামনে হাজির হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকরা। তাঁরা সার্বিক পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন। আর এতে আশ্বস্ত হয়ে কর্মবিরতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আজ সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর ঢাকা, সলিমুল্লাহ ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা ওই বৈঠকে অংশ নেন। এ সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সার্বিক পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ‘শিক্ষানবিশ চিকিৎসক’ হিসেবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ‘অভিভাবকসম ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি কামনা’ করেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকে সতর্ক থাকার প্রতিশ্রুতিও দেন তাঁরা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম চিকিৎসকদের সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। এ সময় তিনি সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি বন্ধ করতে চলমান সংকট দ্রুত নিরসনের লক্ষ্যে সব পক্ষকে ধৈর্যশীল হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের সাজার আদেশ প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফ্যানের সুইচ বন্ধ করতে বলায় এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের বাকবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে অন্য চিকিৎসরা মুমূর্ষু রোগীর সামনেই স্বজনদের মারধর ও কান ধরে ওঠবস করান। এরপর রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে হাসপাতালের গেট আটকে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। ২১ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা ওই রোগী মারা যান।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২ মার্চ চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের পেশাগত সনদের কার্যকারিতা ছয় মাস স্থগিত করে মন্ত্রণালয়। তাঁরা হলেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি এম এ আল মামুন, সহসভাপতি আশিকুজ্জামান আসিফ, সাবেক সহসভাপতি কুতুবউদ্দিন ও নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজ।
এর প্রতিবাদে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বগুড়াসহ সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।