নিখোঁজ সেই কচ্ছপ মিলল সাতক্ষীরার বিলে

অবশেষে খোঁজ মিলেছে পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার ব্যবস্থা লাগানো বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপটির। প্রায় ১২ দিন পর ওই কচ্ছপের দেখা মিলেছে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার এক বিলে।
প্রায় ১২ দিন ধরে ওই কচ্ছপের ট্রান্সমিটার থেকে কোনো সংকেত পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ সোমবার সকালেই সংকেত পাওয়া যায়। ওই সংকেত অনুযায়ী কচ্ছপটিকে পাওয়া যায় তালা উপজেলার শার্শা ইউনিয়নের দোহার গ্রামের পাখিমারা বিলে।
তালা থানার পুলিশ কচ্ছপটি উদ্ধার করে খুলনা বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা জাহিদুল কবির ও মদিনুল আহসানকে জানায়। তাঁরা দুজন লোক পাঠিয়ে কচ্ছপটি নিজেদের অধীনে নিয়ে আসেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুর বাসকা প্রজাতির দুটি কচ্ছপের পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সিস্টেম বসিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ছেড়ে দেওয়া হয়। মূলত বাটাগুর বাসকার স্বভাব, খাদ্যাভ্যাস, বিচরণক্ষেত্র ও জীবনযাপন সম্পর্কে জানতে এবং ছবি সংগ্রহের জন্য পিঠে স্যাটেলাইট স্থাপন করা হয়। সাগরে ছেড়ে দেওয়ার পর গত ৩ বা ৪ মার্চ একটি কচ্ছপ হঠাৎ নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে কচ্ছপটির গতিবিধি, অবস্থান ও সংযুক্ত স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সিস্টেম থেকে কোনো সংকেত পাওয়া যাচ্ছিল না।
আজ সোমবার সকালেই সংকেত মেলে। আর ওই সংকেতের মাধ্যমেই দোহার গ্রামের বিলে সন্ধান মেলে কচ্ছপটির। বিষয়টি নিয়ে কাজ করা এক বিশেষজ্ঞ এনটিভি অনলাইনকে জানান, সুন্দরবনে গাছের শেকড়ের সঙ্গে আটকে যায় কচ্ছপটি। ট্রান্সমিটারটিও আটকে থাকে শেকড়ের সঙ্গে। এ কারণে ট্রান্সমিটার থেকে কোনো সংকেত আসছিল না। পরে শেকড় থেকে ছাড়া পেয়ে কচ্ছপটি ভাসতে ভাসতে ওই বিলে এসে পড়ে। এতদিন সংকেত দিতে না পারলেও আজ ট্রান্সমিটার থেকে সংকেত পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিশেষজ্ঞ আরো জানান, অবস্থান জানার পরই তা তালার থানার পুলিশকে অবহিত করা হয়।
এদিকে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান জানান, স্থানীয় বাসিন্দারাই সকালে বিলে কচ্ছপটি দেখতে পান। পিঠে এমন একটি যন্ত্রাংশ দেখে ভয় পান। পরে তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে কচ্ছপটিকে অক্ষত অবস্থায় নিয়ে আসে।
উদ্ধার হওয়া কচ্ছপটি পুনরায় সুন্দরবন এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। বাংলাদেশ বন বিভাগ, আমেরিকার টারটেল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু ও প্রকৃতি জীবন ফাউন্ডেশন স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সিস্টেমের মাধ্যমে কচ্ছপের জীবনযাপন নিয়ে গবেষণার কাজ করছে।