বনশ্রীর গৃহকর্মী লাইলিকে বিলুপ্ত ছিটমহলে দাফন
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/08/06/photo-1502023420.jpg)
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ার সমন্বয়পাড়ায় বাবার বাড়ির আঙিনায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকার বনশ্রীতে নিহত গৃহকর্মী লাইলি বেগম (২৫)। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় খেজুরতলা নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসার মাঠে কয়েকশ মানুষের অংশগ্রহণে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শনিবার বিকেলে লাইলির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রোববার ভোর ৫টায় লাইলির বাবা নজরুল ইসলাম ও ঢাকায় অবস্থানরত স্বজনরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি দাসিয়ার ছড়ার কালিরহাট বাজার সংলগ্ন সমন্বয়পাড়ায় পৌঁছায়।
এদিকে লাইলি বেগমকে হত্যার প্রতিবাদে ও অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে দাসিয়ার ছড়ার কালিরহাট বাজারে মানববন্ধন করেছে সহস্রাধিক বাসিন্দা। এ সময় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাবেক সভাপতি মঈনুল হক ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফাসহ বিলুপ্ত ছিটের নেতারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার অধিবাসী দুই সন্তানের মা গৃহকর্মী লাইলি বেগমকে ঢাকার বনশ্রীর একটি বাড়িতে নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান তাঁরা।
গত শুক্রবার রাজধানীর বনশ্রী বি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়িতে লাইলি বেগমের মৃত্যু হয়। বাড়ির মালিকের দাবি, লাইলি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্ম হত্যা করেছে। ওই দিন রাতেই লাইলির স্বামীর বড় ভাই শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় গৃহকর্তা মুন্সী মঈনউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী শাহনাজ বেগম ও দারোয়ান তোফাজ্জল হোসেন টিপুকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া একজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। শুক্রবার বিক্ষোভের সময় মঈনউদ্দিন ও দারোয়ান তোফাজ্জল হোসেন টিটুকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাহনাজকে পরদিন শনিবার ওই বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মঈনউদ্দিন ও তোফাজ্জল গতকাল থেকে তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন।
শনিবার লাইলি বেগমের ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ। বিকেলে সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, লাইলির শরীর থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ আলামতগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। এসব পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর আজকের ময়নাতদন্তের পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোহেল মাহমুদ জানান, প্রতিবেদন পাওয়ার পর বোঝা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা। তিনি বলেন, ‘ওই নারীর গলায় আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। পাশাপাশি মাথায় ছোট আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।’
সোহেল মাহমুদ আরো জানান, ওই নারীর ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি গলা থেকে টিস্যু নেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর আগে ওই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি না তা জানতেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব পরীক্ষার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।