গাজীপুরে মোজাম্মেলের বাড়িতে আহত ৫ জন ঢাকা মেডিকেলে
গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে মারধরে আহত পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজনের মাথায়, একজনের ডান হাতে এবং আরেকজনের শরীরে গুরুতর আঘাত রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দেড়টার দিকে গুরুতর আহত পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। তারা হলেন—গাজীপুর গাছা থানার শরিপুর গ্রামের মেহের আলীর ছেলে ইয়াকুব (২৪), টঙ্গী পূর্ব থানার মধুমিতা রোডের গণেশ ঘোষের ছেলে সৌরভ (২২), গাছা থানার আলহেরা পেট্রোল পাম্প এলাকার হাজী জামালের ছেলে কাশেম (১৭), গাজীপুরের সাইন বোর্ডের কামারজুরি এলাকার ফজলুর ছেলে শুভ শাহরিয়া (১৬) এবং জয়দেবপুর থানার জোড়পুকুর এলাকার ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে হাসান (২২)।
আহত ইয়াকুবের ভাই মো. নাছির বলেন, ‘ফাঁদে ফেলে তাঁর ভাইসহ অন্যদের গাজীপুরে আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাসার একটি কক্ষে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে আটকে রাখা হয়, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। তাঁদের এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। তাঁর ভাইয়ের মাথায় আঘাত রয়েছে। তাঁর ভাইসহ কয়েকজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ফারুক আহত পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রাতে গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় স্থানীয় কিছু ব্যক্তি কয়েকজনকে আটক করে মারধর করেন। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দক্ষিণখানে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালায়। তাঁরা বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করে। এ সময় মসজিদের মাইকে মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। মাইকিং শুনে আশপাশের লোকজন বাড়িটি ঘিরে ফেলে। তাঁরা ভাঙচুরকারী কয়েকজনকে মারধর করেন।
এ হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার দিনগত রাত পৌনে দুইটার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের নেতা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমাদের কাছে খবর আসে, ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে আমাদের শিক্ষার্থীরা রওনা হন। দ্রুত ১৫-১৬ জন ঘটনাস্থলে চলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লুটপাট হচ্ছে। এতে বাধা দিলে পেছন থেকে হুট করে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। তাদের হাতে রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই ১৫ জনকে ছাদে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদেরও পেটানো হয়।’