শিল্পী আবদুল জব্বার লাইফ সাপোর্টে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী আবদুল জব্বারকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ইকবাল আর্সলান।
এই চিকিৎসক বলেন, ‘শনিবার রাত থেকেই আবদুল জব্বার সংজ্ঞাহীন হয়ে কোমায় আছেন। তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তাঁর রক্তচাপ দ্রুতই নেমে যাচ্ছে। শরীরের অন্য অর্গানগুলোও কাজ করছে না। তাই অবস্থা একদমই ভালো নয়।’
শিল্পীর স্ত্রী হালিমা জব্বার বলেন, ‘যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আস। সবাই তাঁর জন্য দোয়া করবেন।’
গতকাল শনিবার দুপুর থেকেই সব ধরনের চিকিৎসা ও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ রয়েছে আবদুল জব্বারের।
গুণী এই শিল্পীর ছোট ছেলে বাবু জব্বার জানান, শরীর সাপোর্ট না করায় বাবার চিকিৎসা ও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করেছেন চিকিৎসকরা।
‘ডাক্তার বলেছেন, যেকোনো খবরের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে। আমরা খবরটি শুনে হতাশ হয়েছি। মনে হয়েছে, আকাশ ভেঙে পড়ল। আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাঁকে ভালো করে দেন’, বলেন বাবু জব্বার।
‘আমার বাবার মতো মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রে বিরল। রাষ্ট্রের সকল সংকটে তিনি মানুষের পাশে থেকে আন্দোলন করেছেন। কণ্ঠকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে ছেলের মতো আদর করতেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও বাবাকে সম্মান করেন, ভালোবাসেন। যদি তিনি আর কিছুদিন বেঁচে থাকতেন, তাহলে রাষ্ট্রকে আরো কিছু দিতে পারতেন’, যোগ করেন বাবু।
শিল্পী আবদুল জব্বার বিএসএমএমইউর কেবিন ব্লকের ৬২০ নম্বর কক্ষে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন। চলতি বছরের ৩১ মে তিনি হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা তাঁকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
আর্থিক কারণে নয়, শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্যই আবদুল জব্বারের চিকিৎসা হচ্ছে না বলে জানান ছেলে বাবু জব্বার।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আবদুল জব্বার গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে সারা কলকাতার ক্যাম্পে ক্যাম্পে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি সে সময়ে পাওয়া ১২ লাখ টাকা স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন। তিনি স্বাধীনতা পদক, একুশে পদকসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক পেয়েছেন।