নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় অধিকতর তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/11/29/photo-1448809428.jpg)
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় অধিকতর তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।
আজ রোববার বিকেলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চে এ আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মনিরুজ্জামান কবির।
অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, ‘নজরুলের স্ত্রী বিউটির করা মামলায় ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। যেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ পড়েছে। আমরা বিচারিক আদালতে এ বিষয়ে আবেদন করলে তা খারিজ করে দেওয়া হয়। তাই গত সোমবার হাইকোর্টে এ আবেদন করেছি। আজ শুনানি শুরু হয়েছে।’
মন্টু ঘোষ জানান, দীর্ঘ ১১ মাস তদন্ত শেষে গোয়েন্দা কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ এজাহারের পাঁচ আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, নূর হোসেনের কোষাধ্যক্ষ হাসমত উল্লাহ হাসু, সহযোগী আনোয়ার হোসেন, আমিনুল হক রাজু ও ইকবাল হোসেনের নাম বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। বাদপড়া পাঁচজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে বাদী প্রথমে নিম্ন আদালতে রিভিউ আবেদন করেন। তা খারিজ হয়ে গেলে পুনরায় রিভিউ মামলা করেন। সে মামলাও খারিজ হয়ে যায়। এ কারণেও গত সোমবার উচ্চ আদালতে এই আবেদন করা হয়েছে।
এ মামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ, কমান্ডার এম এম রানা ও মেজর আরিফসহ ২৩ আসামি কারাগারে আছে। পলাতক রয়েছে ১২ আসামি।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরপরই ভারতে পালিয়ে যান মামলার প্রধান আসামি ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন। তখন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে নূর হোসেনের পালিয়ে যাওয়ার কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তু এসব বিষয়ে পলাতক নূর হোসেনের কোনো জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। তাঁর জবানবন্দি ছাড়াই এ ঘটনায় করা দুটি মামলায় ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে র্যাবের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অনেকের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পেলেও ঘটনার অন্তরালে আরো কেউ ছিল কি না তা অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে।
এ অবস্থায় হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১৮ মাস পর গত ১৫ নভেম্বর রাতে সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৬ নভেম্বর আদালতে শুনানি শেষে ১১ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নূর হোসেনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহতদের স্বজনরা।