চাকরিচ্যুত নাজিরের কাণ্ড!

উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে ২২ লাখ টাকা তোলার সময় হাতেনাতে আটক হয়েছেন উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের চাকরিচ্যুত নাজির মো. মহিউদ্দিন। আজ সোমবার ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় সোনালী ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটে।
আটক মহিউদ্দিন একই জেলার কোটচাঁদুপর উপজেলার একরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মহেশপুর ভূমি কার্যালয়ে নাজির পদে চাকরি করতেন। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে মহিউদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়।
মহেশপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এসি ল্যান্ড) চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের চাকরিচ্যুত নাজির মহিউদ্দিন আমার (উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা) স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে এবং তা স্থানীয় হিসাবরক্ষণ অফিসের সুপারিটেনডেন্টকে দিয়ে পাস করিয়ে সোনালী ব্যাংক মহেশপুর শাখায় দাখিল করে।’ তিনি আরো জানান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন-ভাতাসহ ভবিষ্য তহবিলের মোট ২১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করার সময় ধরা পড়েন মহিউদ্দিন। এরপর তাঁকে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
মহেশপুর সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সুপারিটেনডেন্ট সুজিত কুমার বিশ্বাসের অনুমোদন করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতনের ছয় লাখ ৮৩ হাজার টাকার একটি বিলের টাকা উত্তোলনের জন্য প্রথমে দাখিল করা হয়। ব্যাংকের হিসাবরক্ষক (ক্যাশিয়ার) আছাদুর রহমান টাকা গুনে মহিউদ্দিনের হাতে দেওয়ার সময় মহেশপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার স্বাক্ষর নিয়ে সন্দেহ হয়। তবে বিলে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সুপারিটেনডেন্টের স্বাক্ষর সঠিক পান বলে স্বীকার করেছেন ব্যাংক ব্যবস্থাপক।
নজরুল ইসলাম আরো জানান, ব্যাংকের ক্যাশিয়ারের কথাবার্তা বুঝতে পেরে মহিউদ্দিন ব্যাংক থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে কৌশলে তাঁকে আটক করা হয় এবং পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়ার পর তাঁর কাছ থেকে আরো ১৫ লাখ টাকার এসিল্যান্ডের জাল স্বাক্ষর করা হিসাবরক্ষণ অফিসের পাস করা বিল-ভাউচার উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ অফিসের সুপারিটেনডেন্ট সুজিত কুমার বিশ্বাসসহ অডিটর জড়িত বলে দাবি করেন ব্যাংক ব্যবস্থাপক।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বিপ্লব বলেছেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সোনালী ব্যাংক মামলাটি দায়ের করবে বলে জানিয়েছেন ওসি।