ফেসবুকে মনিরুলের জবাব
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/07/27/photo-1469608390.jpg)
রাজধানীর কল্যাণপুরে গতকাল মঙ্গলবার ‘জঙ্গি আস্তানা’য় পুলিশের অভিযান ও নয় ‘জঙ্গি’ নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে জনমনে বেশ কিছু প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষ করে অভিযানের পর ঘটনাস্থল ও নিহতদের ছবি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ‘জঙ্গি’দের কথিত আস্তানার ভেতরে আইএসের পতাকা টানানো, নিহত জঙ্গিদের সবার পরনে একই ধরনের পাঞ্জাবি ও লাল-সাদা রুমাল থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের অভিযান চলাকালে ‘জঙ্গি’রা সবাই কীভাবে একই ধরনের পোশাক পরার সময় পেলেন বা তাঁরা কি এই ধরনের পোশাক পরে রাতে ঘুমাতেন নাকি তা নিয়ে সরব সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহারকারীরা।
তবে এসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম। মঙ্গলবার গভীর রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জনমনে ওঠা এসব প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
মনিরুল ইসলাম লিখেছেন, “কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানকালে সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড নিক্ষেপে পুলিশের চার কর্মকর্তার মৃত্যু, আহত ৪২ কর্মকর্তা, তিন জঙ্গি গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে!”
‘দুঃখিত, বন্ধু, এ রকম একটা খবর যদি আপনি আশা করে থাকেন তাহলে আমরা আপনার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি! প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় আপনি যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, আমরা সত্যিই দুঃখিত!’
“‘নাম-ঠিকানা না জেনে জঙ্গি বলছেন কীভাবে?’ ‘জঙ্গিরা এ রকম পাঞ্জাবি, কেডস পরে ঘুমাতে গিয়েছিল কেন?’ ‘চারটি পিস্তল দিয়ে কীভাবে সারা রাত মুহুর্মুহু গুলি চালানো সম্ভব?’ ‘কেন তাদের জীবিত ধরা গেল না?’ এ রকম অনেক যৌক্তিক প্রশ্ন কারো মনে আসতেই পারে।”
“আমি যদি বলি আপনি বুঝে ও না বোঝার ভান করছেন আপনি খণ্ডাবেন কী করে? গোটা সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে আলোচনা হচ্ছে যে প্রতিবশীরা বলছে, ওই বাসার লোকেরা সারা রাতই কথিত জিহাদের সপক্ষে স্লোগান দিয়েছে, তাদের রুমে কথিত আইএসের পতাকা পাওয়া গেছে, প্রচুর সংখ্যক উগ্রবাদী বইপুস্তক পাওয়া গেছে। তারপরও এরা জঙ্গি কি না তা বোঝার জন্য কি রিসার্চের প্রয়োজন আছে?”
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, “আনুমানিক রাত ১টার কাছাকাছি পুলিশের প্রথম দলটি বাসাটিতে নক করে এবং প্রথম দফা সংঘর্ষের পরে প্রায় সারা রাত বিল্ডিংটা কর্ডন করে রাখা হয়। চূড়ান্ত অভিযান শুরু হয় ভোর ৫টা ৫০-এর দিকে। এতদীর্ঘ সময় তারা ঘুমিয়ে ছিল কি না, এই পোশাক পরার সময় পেয়েছিল কি না তা বোঝার জন্য বুদ্ধিজীবী হওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, দয়া করে ভেবে দেখবেন কি? সারা রাত মুহুর্মুহু গোলাগুলি হয়েছে এ রকম কোনো তথ্য আমার জানা নেই। আমি যতটুকু জানি যখনই পুলিশ বাসাটিতে ঢুকতে চেষ্টা করেছে, ততবারই গুলি চালানো হয়েছে। চূড়ান্ত অভিযান হয়েছে এক ঘণ্টার কাছাকাছি। ওই সময়েই মূলত চূড়ান্ত গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আপনার বিশ্বাস, এ তথ্য আপনার অজানা নয়। তাহলে কেন এ রকম প্রশ্ন তুলছেন? পুলিশের সাফল্য মানতে পারছেন না তাই তো!”
“আপনি তো সবজান্তা অথচ আপনি এই ধরনের অপারেশনগুলোর ইতিহাস জানেন না। দেশে এবং দেশের বাইরে কোথায় এই ধরনের অপারেশনে কতজন জীবিত গ্রেপ্তর হয়েছে জানালে বাধিত হব। আসলে, পুলিশের কেউ মারা যায়নি কিংবা কেউ গুরুতর আহত হয়নি- এতেই তো আপনার যত আপত্তি তাই না, বন্ধু!”