নবীনগরে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা

একটা সময় পান চাষে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পান চাষিরা। পর্যায়ক্রমে এ এলাকার অনেক চাষি পান চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং তারা সফলতার মুখও দেখেন। সময়ের সাথে সাথে এ উপজেলায় কৃষি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতা ও সরকারি প্রণোদনার অভাবে দিন দিন কমে যাচ্ছে পান আবাদের জমির পরিমাণ।
জানা যায়, একদিকে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, অপরদিকে চাষিদেরকে সরকারি প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় সুস্বাদু পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা। উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের বহু পরিবার আদিকাল ধরে পান চাষে জড়িত ছিল। এ পান স্থানীয়দের কাছে খুবই প্রিয় ছিল। এর চাহিদাও প্রচুর। সরকারি প্রণোদনা বা সঠিক পরিকল্পনায় এ অঞ্চলে পানের পরিকল্পিত চাষাবাদ ঘুরিয়ে দিতে পারে স্থানীয় পান চাষিদের ভাগ্যের চাকা, এমনকি জাতীয় অর্থনীতিতেও রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। একটা সময় শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীঘর, শাহবাজপুর এবং শ্যামগ্রামে পানের বরজ থাকলেও এখন তা অনেকটা কমে এসেছে। পূর্ব পুরুষের পেশা হিসেবে এখনো যারা পানের বরজ নিয়ে আছেন তারাও দিন দিন এ পেশায় আগ্রহ হারাচ্ছেন।
স্থানীয় পান চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পানের বরজ তৈরি করে পানের লতা লাগিয়ে ভালো ফলন পেলেও সার কীটনাশক ব্যবহারে পানের রোগ ঠেকাতে পারছেন না তারা। রোগবালাই কিংবা সমস্যা দেখা দিলে তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা কিংবা ঔষধ বিক্রেতাদের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়, এ ব্যাপারে চাষিরা উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে কোনো পরামর্শ বা সহযোগিতা পান না। তাই পানের বরজ বাদ দিয়ে তারা অন্য ফসল ফলানোর দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।
এখানকার একজন স্থানীয় পান চাষি মনোরঞ্জন দত্ত এনটিভি অনলাইনকে জানান, সরকার কৃষকদের জন্য সারা দেশে বিনামূল্যে সার, বীজ ও কীটনাশক বিতরণ করলেও পানচাষির কপালে সার-বীজ ও এক বোতল কীটনাশকও জোটে না। কৃষি বিভাগ থেকে যদি পান চাষে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে উৎসাহিত করতেন তাহলে চাষিরা আগ্রহ হারাতেন না। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে যেকোনো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকার তাদের সহায়তা করে কিন্তু পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাষির পাশে কেউ দাঁড়ায় না। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আর কেউ এ এলাকায় পান চাষে আগ্রহ দেখাবে না।
এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকা ছাড়া পান চাষের উপর কৃষি বিভাগের কোনো কার্যক্রম নেই। তবে এখানকার পান চাষিরা যেকোনো প্রয়োজনে পরামর্শ চাইলে তাদের আমরা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবো।’