আখাউড়ায় মহাসড়কের বেহাল অবস্থা, জনভোগান্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার থেকে তন্তর বাজার পর্যন্ত সড়কের নাজুক অবস্থার কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। বড় বড় খানাখন্দ ও ভাঙার কারণে অতিষ্ঠ এ সড়কে চলাচলকারীরা। বৃষ্টি এলে কাদামাটি ও রোদ থাকলে ধুলোর ঝড় বয়ে যায় এ সড়কে।
বাংলাদেশ-ভারত আন্তবাণিজ্য তরান্বিত করতে ২০১৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার চারলেন মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় তৎকালীন সরকার। যার কাজের অগ্রগতি হতাশাজনক। জমি অধিগ্রহণসহ নানান জটিলতায় ২০২০ সালে শুরু হওয়া পাঁচ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জুনে। এর মধ্যেই কয়েকবার পিছিয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ।
গত বছর আগস্ট মাসে পর নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারতে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকন ইনফাস্ট্রাকচারের প্রায় ৩০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী, পরে নভেম্বরে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের পর তারা আবার কাজে ফিরে। তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মালামাল চুরিসহ নানা কারণ দেখিয়ে তারা মহাসড়কের নির্মাণকাজ চালাচ্ছে কচ্ছপ গতিতে। এখন পর্যন্ত এই মহাসড়ক নির্মাণকাজের অগ্রগতি মাত্র ৫৭ শতাংশ। ইতোমধ্যে এ কাজ শেষ করতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বিভক্ত, যার মধ্যে তৃতীয় প্যাকেজ তন্তর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর অংশের কাজ একেবারেই হয়নি। এর ফলে তন্তর বাজার এলাকায় দিনের পর দিন কষ্ট করে আসছে এ মহাসড়কে চলাচলকারী লাখ লাখ মানুষ। এ অবস্থায় মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে পোহাতে হচ্ছে ভয়াবহ জনদুর্ভোগ। গর্ত, কাদা ও পানি জমে সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যানজট, দুর্ঘটনা ও অতিরিক্ত সময় নষ্ট হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা।
তন্তর বাজার পরিচালনা কমিটিরি সভাপতি লোকমান খন্দকার বলেন, এই মহাসড়কের বেহাল দশার জন্য আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ডুবে যাওয়ার পথে। তন্তর বাজার অংশে প্রতিনিয়ত দুই থেকে তিন ঘণ্টার লম্বা যানজট লেগেই থাকে। পাশাপাশি সড়কটির নির্মাণকাজ ঝুলে থাকায় ধুলোর জন্য চলাচল করা কষ্ট হয়ে যায় আমাদের। দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা হোক।
রুটি গ্রামের বাসিন্দা মাসুম বলেন, এ সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ ঢাকা ও সিলেটে যাতায়াত করি,কিন্তু দীর্ঘ আট বছর হয়ে গেল প্রকল্প অনুমোদনের, এখন পর্যন্ত কাজই শুরু হয়নি আমাদের ধরখার থেকে তন্তর অংশের। এতে আমরা অনেক দুর্ভোগে আছি।
হাসান নামক এক বাসচালক বলেন, মহাসড়কের বেশিরভাগ জায়গাতেই বড় বড় গর্ত হয়ে আছে,পাশাপাশি অতিরিক্ত ধুলোর জন্য এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানো আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। সরকারের কাছে অনুরোধ করব খুব দ্রুত যেন এই সড়কটি সংস্কার করে দেয়।
কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আশুগঞ্জ-আখাউড় চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামিম আহমেদ বলেন, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই ধরখার থেকে তন্তর পর্যন্ত অংশের গর্তগুলো ভরাট করে সড়কটি সংস্কার করে মানুষের চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে। বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, আশাকরি খুব দ্রুতই এ সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হবে।
সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে মানুষের চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার দাবি স্থানীয় বাসিন্দাসহ এ মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের।