দুই দপ্তরের টানাপোড়েনে সেতুর নির্মাণ কাজ স্থগিত

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের বাকপাড়া এলাকায় খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। সেতুর নির্মাণ কাজ স্থগিত রয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলা বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় খালের ওপর ৯টি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস অনুমোদন পায়। এর মধ্যে দরগ্রাম ইউনিয়নের রৌহা বাকপাড়া খালের ওপর একটি নতুন সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। বর্তমানে সেখানে ৩০ বছরের পুরোনো একটি সরু সেতু রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। এটি নিলামের মাধ্যমে অপসারণের জন্য মৌখিকভাবে এলজিইডিকে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা সাজাহান আলী বলেন, বর্তমান সেতুটি জরাজীর্ণ ও সংকীর্ণ হওয়ায় মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। সেতুটি এতটাই সরু যে, দুই পাশ থেকে একসঙ্গে দুটি ভ্যানগাড়ি উঠলে ক্রসিং করা যায় না। সেতুটির প্রশস্ততা পাশে ৬ ফিট। নতুন সেতুর জন্য দরপত্র আহ্বান হলেও কাজ শুরু করা যাচ্ছে না, যা হতাশাজনক।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দপ্তর ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরা যেকোনো সড়কের ওপর সেতু নির্মাণের অধিকারী। তবে এলজিইডি এই নির্মাণকাজে বাধা দিচ্ছে, যা অযৌক্তিক। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’
খলিলুর রহমান মোল্লা আরও বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সময় বাড়ানোর আবেদন করলে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। কিন্তু এলজিইডির অনড় অবস্থানের কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে বরাদ্দকৃত ২৭ লাখ ৮০ হাজার ২৫২ টাকা ফেরত যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সাটুরিয়ার এলজিইডির কর্মকর্তা ইমরুল হোসেন বলেন, ‘রৌহা বাকপাড়া সড়কটি এলজিইডির আওতায় রয়েছে, যার কোড নম্বর ৪০৬৪। সড়কটির উন্নয়ন ও খালের ওপর সেতু নির্মাণের দায়িত্ব আমাদের। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কীভাবে আমাদের সড়কের ওপর সেতু নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করেছে, তা বোধগম্য নয়।’
দরগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলীনূর বকস রতন বলেন, সেতু নির্মাণ নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, দুই দপ্তরের বিরোধ নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে জনগণের ভোগান্তি কমে।