২০২৪ সালে বিশ্বে বায়ুদূষণের শীর্ষে বাংলাদেশ ও চাদ : আইকিউএয়ার

বাংলাদেশ ২০২৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বায়ু দূষিত দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে স্থান পেয়েছে। মাত্র সাতটি দেশ গতবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত বাতাসের মানদণ্ড পূরণ করেছে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ু মান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্য অনুসারে, গত বছর বাংলাদেশের গড় বায়ু দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচওর নির্দেশিত মাত্রার চেয়ে ১৫ গুণ বেশি ছিল।
রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৈশ্বিক দূষণ নিয়ে করা এ তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষ স্থানে রয়েছে আফ্রিকার দেশ চাদ। উদ্বেগজনক উচ্চ বায়ুদূষণের দেশের তালিকায় পার্শ্ববর্তী ভারত, পাকিস্তান, কঙ্গোও রয়েছে।
আরও পড়ুন : ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিয়ে বিশ্বে তৃতীয় দূষিত শহর ঢাকা
আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রকাশিত আইকিউএয়ারের তথ্য বলছে, গতবছর মাত্র সাতটি দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর বাতাসের মানদণ্ড পূরণ করেছে। দেশগুলো হল- অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, বাহামা, বার্বাডোস, গ্রেনাডা, এস্তোনিয়া ও আইসল্যান্ড।
রয়টার্স লিখেছে, বিশ্বব্যাপী বায়ুর মান নিয়ে একটি অস্পষ্টতা রয়েছে। বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকায়। উন্নয়নশীল অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও কনস্যুলেট ভবনে স্থাপিত বায়ু মান পর্যবেক্ষণ সেন্সরের ওপর নির্ভর করত। তবে বাজেট সংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সম্প্রতি এ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। গত সপ্তাহে সরকারি বায়ু মান পর্যবেক্ষণ ওয়েবসাইট থেকে ১৭ বছরের বেশি সময়ের তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে, যার মধ্যে চাদের তথ্যও ছিল।
আইকিউএয়ারের বায়ু মানবিজ্ঞান ব্যবস্থাপক ক্রিস্টি চেস্টার-শ্রোয়েডার বলেন, “বেশিরভাগ দেশের কিছু বিকল্প তথ্যসূত্র থাকলেও, আফ্রিকায় এর বড় প্রভাবে পড়বে। কারণ অনেক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই ওয়েবসাইটের তথ্যই একমাত্র বাতাসের মান পর্যবেক্ষণের উৎস ছিল।”
চাদ, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও কঙ্গোর পরেই তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে পিএম২.৫-এর গড় মাত্রা আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কমে ৫০.৬ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে নামলেও, বিশ্বের ২০টি সবচেয়ে দূষিত শহরের মধ্যে ১২টিই ভারতের। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্পাঞ্চলীয় শহর বিরনিহাট তালিকার শীর্ষে রয়েছে, যেখানে পিএম২.৫-এর গড় মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১২৮ মাইক্রোগ্রাম।
আরও পড়ুন : ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিয়ে বিশ্বে বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা
চেস্টার-শ্রোয়েডার সতর্ক করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বায়ু দূষণ বাড়িয়ে তুলছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকায় আরও ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী বনাঞ্চলীয় দাবানল দেখা দিয়েছে, যা বায়ু দূষণকে তীব্র করছে।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের (ইপিআইসি) ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম-এর পরিচালক ক্রিস্টা হসেনকফ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় অন্তত ৩৪টি দেশ দূষণের নির্ভরযোগ্য তথ্য থেকে বঞ্চিত হবে।