কবিরাজের অপচিকিৎসায় হাত পচে গেল স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর গ্রামের কবিরাজ শাহ জামাল। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নিজ বাড়িতেই ‘চেম্বার’ করেন তিনি। হাড় ভাঙ্গা, হাড় ক্ষয়, হাড় বড় হওয়া, বাতব্যথা রোগের সমস্যা ও নাকের পলিপাসের মতো জটিল রোগের চিকিৎসা দেন তিনি।
সম্প্রতি জেলার আখাউড়া উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল হান্নানের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে ফাহিম (১৩) অটোরিকশা দুর্ঘটনায় বাম হাত ভেঙে ফেলে। লোকজনের মাধ্যমে কবিরাজ শাহ জামালের সন্ধান পেয়ে তার মা তাকে সেখানে নিয়ে যায়। কবিরাজ শাহ জামাল ১৮ হাজার টাকার চুক্তিতে শুরু করেন চিকিৎসা।
তবে কবিরাজের অপচিকিৎসায় ফাহিমের হাত পচে ঘা হয়ে যায়। অবস্থার গুরুতর অবনতি হয়ে চিরতরে পঙ্গু হতে বসেছে সে, এমন অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগও করেছেন ফাহিমের মা নাজমা বেগম।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কবিরাজ শাহ জামাল বলেন, 'বাপ-দাদার কাছ থেকে কবিরাজি শিখেছি। আমরা সম্পূর্ণ অর্গানিক উপায়ে গাছ-গাছালি দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। প্রতিদিন ৪০-৫০ জন রোগী আসে। প্রতি রোগী থেকে মাসে ৪-৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকি।’ কোনো চিকিৎসা সনদ না থাকলেও অভিজ্ঞতা থেকে এক্স-রে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসা দেন তিনি। ফাহিমের অবস্থার অবনতি হলে তিনিই তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বলেন।
বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন ভূইয়া এ প্রসঙ্গে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা নাজমা বেগমের ছেলে ফাহিমের ভুল চিকিৎসার একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার উদ্যোগ নেব। আমরা বলতে চাই এই ধরনের কবিরাজি চিকিৎসায় কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সবাই যেন সচেতন থাকে।