প্রবাসী বাবার মরদেহ দাফন শেষে পরীক্ষার হলে ছেলে
মধ্যরাতে মালদ্বীপ থেকে বাড়িতে আসে বাবার মরদেহ। রাতভর বাবার মরদেহের পাশে ছিলেন ছেলে। আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করে দাখিল পরীক্ষা দিতে গিয়েছেন ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বড় ডালিমা গ্রামে।
নিহতের স্বজনরা জানান, বড় ডালিমা গ্রামের আলাউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে জসিম উদ্দিন দীর্ঘ ৬ ছয় বছর ধরে মালদ্বীপে ছিলেন। মালদ্বীপের কুলহুধুফুশি আইল্যান্ডে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন তিনি।
গত ২৬ এপ্রিল মালদ্বীপের কুলহুধুফুশি রিজওনালায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মারা যাওয়ার চারদিন পর গতকাল রাতে মালদ্বীপ থেকে মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহতের বড় ভাই ফজলুর রহমান ফোরকান বলেন, তাঁর ভাই জসিম উদ্দিনের স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। ছেলে মো. মেহনাব হোসেন পূব খাজুরবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছেন। কালাইয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। আজ তার কৃষি পরীক্ষা। মেয়ে জারিন ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।
নিহত জসিম উদ্দিনের ছেলে বলেন, বাবা আগে সৌদি আরব থাকতেন। পরে মালদ্বীপে যান। আমার জন্মের পর তাকে মাত্র ৫ বছর কাছে পেয়েছি। তখন আমি ছোট ছিলাম। তার সাথে কাটানো কোনো স্মৃতি তেমন মনে পড়ছে না। মালদ্বীপে আছেন ৬ বছর ধরে। তার সাথে কথা হত ভিডিও কলে। আসছে কোরবানির ঈদে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। বাবা ঠিকই ফিরছেন তবে মরদেহ হয়ে। যেদিন মারা যায় সেদিন আমার ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। আজ দাফন শেষ করে কৃষি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি।
নিহতের স্ত্রী মাসুমা আক্তার বলেন, প্রায় ৭ বছর আগে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে মালদ্বীপ গিয়েছিলেন জসিম উদ্দিন। স্বপ্ন ছিল কাজ করে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন। সংসারে ফিরিয়ে আনবেন স্বচ্ছলতা। হাসি ফোটাবেন স্ত্রী সন্তানদের মুখে। স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তেও এসেছিলেন। কথা ছিল ঈদুল আজহায় বাড়ি ফিরবেন। পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদ করবেন। এখন ঈদের আগেই বাড়ি ফিরলেন। তবে জীবিত নয়, মরদেহ হয়ে।