শাহবাগে নানা আন্দোলন, যা বলছেন ফুল ব্যবসায়ীরা

আবারও উত্তাল রাজধানীর শাহবাগ মোড়। সবশেষ ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময় আন্দোলন চলে এই এলাকায়। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানেও বেশ কিছুদিন আন্দোলন হয় শাহবাগে।
এবার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আবারও উত্তাল শাহবাগ। জুলাই ঐক্য নামের একটি প্লাটফর্মের উদ্যোগে শুক্রবার থেকে শাহবাগ মোড়ে শুরু হয় এই আন্দোলন। যেখানে এনসিপি, জামায়াত-শিবিরসহ প্রায় ৩৬টি দল-সংগঠন একাত্মতা পোষণ করে মাঠে নেমেছে।
আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের আন্দোলনে নিজেদের সমর্থন থাকলেও খুব বেশি সময় ধরে শাহবাগে এই আন্দোলন চলুক তা চায় না শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি। তাদের দাবি শাহবাগে লম্বা সময় ধরে আন্দোলন চলতে থাকলে ফুল ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে হয়।
শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির ক্যাশিয়ার বিল্লাল হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে যখন গণজাগরণ মঞ্চ হয় তখন আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই। তখন শাহবাগ ও এর আশেপাশে সব এলাকা বন্ধ ছিল। আমরা ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারিনি।
বিল্লাল হোসেন বলেন, বিগত কয়েক বছর আন্দোলন না হলেও এখন আবার শুরু হয়েছে। আমরা চাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে আন্দোলন চলছে তার দ্রুত শেষ হয়ে যাক। বেশি সময় ধরে চললে তাতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।
বিল্লাল হোসেন আরো বলেন, আপনি দেখুন শুক্রবারে আমাদের প্রায় ৩০ হাজার টাকা করে বিক্রি হয়। কিন্তু গতকাল শুক্রবারে আমাদের বিক্রি হয়েছে এভারেজে ১৫০০০ টাকার মতো। অন্যান্য দিনগুলোতে আমরা এভারেজ ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করি। অথচ আজকে কারো ২০০০ কারো ৩০০০ কারো বা ৫০০০ হয়েছে। এতে আমাদের লস হচ্ছে ফুল নষ্ট হচ্ছে। আমরা তো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী; কাঁচামালের ব্যবসা। আমরা যদি ঠিকভাবে বিক্রি না করতে পারি আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে যারা ফুল উৎপাদন করেন তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
শাহবাগের এই ফুলের মার্কেটে প্রায় ১০ বছর ধরে ব্যবসা করছেন আবু জাফর। তিনি বলেন, চলমান এই আন্দোলনকে সমর্থন করে বলছি, যত প্রকার আন্দোলন আছে সেগুলো যদি প্রেসক্লাবকেন্দ্রিক হয় তাহলে আমাদের ক্ষতিটা কমে যাবে। আমরা ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারব।
আবু জাফর বলেন, আমাদের সমিতির অধীনে প্রায় ৪৭ ফুলের দোকান আছে। সবার পরিবার আছে, এক একটা দোকানে তিনজন চারজন করে সেলসম্যান থাকে। তাদের দৈনিক হিসেবে বেতন। আমরা ফুল বিক্রি করতে পারলেও তাদেরকে বেতন দিতে হবে না করতে পারলেও দিতে হবে। এখন আমরা যদি ঠিকভাবে ব্যবসা না করতে পারি তাহলে তো আমরা তাদেরকে বেতন দিতে পারবো না।
শাহবাগ থেকে ফুলের দোকান অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নে বিল্লাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে আমাদের ফুলের দোকান। আমরা দোকানে অন্য কোথাও নিলে এত ভালো ব্যবসার সুযোগ হয়তো পাবো না। কারণ মানুষজন যারাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরতে আসে তারাই আমাদের এখানে ফুল কিনে। এখন দোকানে অন্য কোথাও নিলে সেই ব্যবসা তো আর আমার থাকবে না। আমাদের দাবি দ্রুত সময়ে আন্দোলনের শেষ হয়ে গেলে আমরা যেন মুক্তভাবে ব্যবসা করতে পারি।