একটি ছাত্র সংগঠনের অ্যাক্টিভিস্টদের কাজের নিন্দা জানালেন ছাত্রদল সা.সম্পাদক

সাম্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দল, মত নির্বিশেষে অনেক ছাত্র সংগঠন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানানোয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির তাদের প্রতি ‘কৃতজ্ঞতা প্রকাশ’ করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি একটি ছাত্রসংগঠনের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের কুরুচিপূর্ণ কাজের নিন্দা জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার (১৬ মে) অনেক ছাত্র সংগঠন ও ছাত্ররা সাম্য হত্যার প্রতিবাদ করায় নাসির উদ্দিন নাসির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা ছাত্রনেতা সাম্যের নামে নানা প্রোপাগান্ডা ও গুজব ছড়িয়ে ক্রমাগত ‘ভিক্টিম ব্লেমিং’ করে যাচ্ছে। আমরা তাদের এই কুরুচিপূর্ণ কাজের নিন্দা জানাই।
নাসির আরও বলেন, ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মীর মতো শহীদ সাম্যও জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের একজন সম্মুখ সারির যোদ্ধা। আন্দোলনে তাঁর সাহসী ভূমিকার ভিডিও চিত্র আপনারা দেখেছেন। সাম্য হত্যার প্রতিবাদে সারা দেশের ছাত্রজনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করেছে। সাম্যর ক্যাম্পাসে সার্বজনীন প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাঁর জানাজা এবং প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু একটি ছাত্র সংগঠনের অনলাইনের জনশক্তিরা সর্বশক্তি দিয়ে নায্য প্রতিবাদ সমাবেশকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। তারা এ ক্ষেত্রে পুরোনো ট্রাকের ছবি দিয়ে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে।
নাসির আরও বলেন, সাম্য হত্যাকাণ্ডের দায়ে গ্রেপ্তার করা আসামির সাথে জনৈক শ্রমিক দলের নেতার নামের মিল দেখিয়ে উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। তাদের সংঘবদ্ধ আচরণ প্রমাণ করে তারা সাম্য হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত বা বিচার চায় না। বরং হত্যার শিকার ভিকটিমকেই যেনতেনভাবে দোষারোপ করা তাদের রাজনীতির অভীষ্ট লক্ষ্য। আমরা এসব প্রোপাগাণ্ডা ও মিথ্যাচারের নিন্দা জানাই। শহীদ সাম্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।
নাসির আরও বলেন, ছাত্রনেতা সাম্য হত্যাকাণ্ডের দায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রক্টর কোনোভাবে এড়াতে পারেন না। তাঁরা দায়িত্ব নেওয়ার পরে মাত্র নয় মাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। প্রশাসন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে দুটি হত্যাকাণ্ডই এড়ানো যেত।
তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ড, ফ্যাসিস্ট হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলা, চারুকলায় হাসিনার মোটিফে আগুন দেওয়া থেকে ছাত্রদলনেতা সাম্য হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটনাগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ভিসি-প্রক্টরের নিষ্ক্রিয়তার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপত্তাহীন এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হাইকোর্ট, চানখারপুল, বকশিবাজার, পলাশি, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি, মেট্রোরেল, ঢাকা মেডিকেলের গেট, বার্ন ইউনিটসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকা এবং মূল ক্যাম্পাসের বাইরের একাডেমিক ও আবাসিক হল এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ২৪ ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিশ্বিবদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরের। অন্যথায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময় ছিনতাই, চুরি, শ্লীলতাহানি ও হত্যার শিকার হতে পারেন। এমনকি ধর্ষণের মতো নৃশংস ঘটনাও ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে না পারায় বর্তমান উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ করাই সমীচীন। অপরাধী চক্র কখনও সূক্ষাতিসূক্ষ সীমানা মেপে অপরাধ করে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসের চারদিকে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, মহান আল্লাহ আমাদের সহযোদ্ধা মরহুম সাম্যকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুন-আমিন।