সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় পৌর ভবন, নাগরিক সেবা ব্যাহত

প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও সামান্য বৃষ্টিতেই পানির নিচে তলিয়ে যায় মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর ভবন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে পৌর ভবনের সামনের অংশ দেবে যায়। এতে করে অফিস কক্ষের পুরো নিচতলা পানিতে তলিয়ে যায়, যার কারণে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পর্যন্ত ভিজে অফিস করতে হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, বর্ষা মৌসুম এলেই এই জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করে। এতে দেখা দিচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, অফিসের নথিপত্র সংরক্ষণে সমস্যা ও নাগরিক সেবায় স্থবিরতা।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত ছেংগারচর পৌরসভাটি প্রথমে (গ) শ্রেণির পৌরসভা ছিল। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ৭ আগস্ট (খ) শ্রেণি এবং ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি (ক) শ্রেণিতে উন্নীত হয়। বর্তমানে পৌরসভার আয়তন ৩৫ দশমিক ৩৫ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ৭৪ হাজার ৫৬৫ জন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও অবকাঠামোগত উন্নয়নে যেমন নেই সুপরিকল্পনা, তেমনি আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনার ছোঁয়াও লাগে না বাস্তবে।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ভবনটি অনেক আগেই নির্মিত হলেও আশপাশের রাস্তা একাধিকবার উন্নয়ন ও সংস্কারের মাধ্যমে উঁচু করা হয়। কিন্তু পৌর ভবনের উচ্চতা সেই আগের মতোই রয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির পানি ভবনের চত্বর থেকে বের হতে না পেরে জমে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, এই ভবনের এমন দশা হলে বুঝে নিতে হবে পুরো পৌরসভার অবস্থা কেমন। প্রতি বছর একই দৃশ্য দেখতে হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মামুন মিয়া বলেন, সেবা নিতে এসে পানি ভেঙে পৌর ভবনে ঢুকতে হয়। এটা কোনো আধুনিক পৌরসভার চিত্র হতে পারে না। এটি আর শুধু একটি স্থাপনার সমস্যা নয়, এটি জনস্বার্থের প্রশ্ন। পৌর নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও সচল সেবাকেন্দ্র নিশ্চিত করতে দ্রুত ভিত্তিমূলক অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থার বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।
ছেংগারচর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুসুম মনি বলেন, ভবনটির নিচু অবস্থান ও অপর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে প্রতি বছর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আমরা ইতিমধ্যেই সমস্যা নিরসনে পদক্ষেপ নিচ্ছি। ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধিসহ নতুন ড্রেনেজ প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। আগামী বাজেটে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হবে।