১২ বছরেও শেষ হয়নি খুলনার শিপইয়ার্ড-রূপসা সড়কের কাজ

খুলনার শিপইয়ার্ড-রূপসা ব্রিজ সংযোগ সড়কের মাত্র ৩ কিলোমিটার সম্প্রসারণ কাজ ১২ বছরেও শেষ হয়নি। ২০১৩ সালে ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হলেও তিন দফায় ব্যয় বেড়ে এখন ২৫৯ কোটি টাকা ছুঁয়েছে।
প্রকল্পটি শুরুতে কেডিএ ও সিটি করপোরেশনের দ্বন্দ্বে আটকে যায়। পরে শেখ পরিবারের হস্তক্ষেপে কাজ কেডিএ’র হাতে গেলেও জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম দেখা দেয়। ফাঁকা জমিকে স্থাপনা দেখিয়ে বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে।
২০১৮ সালে টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে ‘শেখ বাড়ির পছন্দের’ মাহাবুব ব্রাদার্স লিমিটেডকে কাজ দেওয়া হয়। এরপর ব্যয় আরও বেড়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, এই বাড়তি টাকার মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা চলে গেছে ‘শেখ বাড়ি’র পকেটে। কাজের অগ্রগতি এখনও ৫০ শতাংশের নিচে।
ঠিকাদার মাহাবুবুর রহমান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামালের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট ছিলেন। তার প্রচারণা ব্যয় মেটাতে আরও একটি ১০০ কোটি টাকার কাজ তাকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
দীর্ঘদিন সড়ক কাজ বন্ধ থাকায় দুই পাশের দোকানপাট বন্ধ, প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয় সাংবাদিক কাজী মোতাহার বাবু বলেন, ‘তিন কিলোমিটার সড়কে এত সময় ও ব্যয়, এটি বিশ্ব রেকর্ড হতে পারে।’
এ ব্যাপারে জানতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স লিমিটেডের এমডি মহাবুবুর রহমানের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে জানান, তিনি বাগেরহাট-গোপালগঞ্জ রয়েছেন।
কেডিএর বর্তমান চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কিছু জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হয়েছে এবং এর পেছনে আগের কর্মকর্তাদের গাফিলতি রয়েছে। প্রকল্প পরিকল্পনার সময়েই জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সম্ভাব্য জটিলতা বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল। মাহবুব ব্রাদার্স লিমিটেড টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা না হলেও আগের কর্মকর্তারা তাদেরকেই ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছিলেন। তবে এখন ঠিকাদারকে ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।