দিনাজপুরের আম যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডে

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আমচাষে বিপ্লব ঘটাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। এরই মধ্যে উপজেলার সদরডাঙ্গা গ্রামের মো. মমিনুল ইসলামের আমবাগান থেকে ব্যানানা জাতের ১০০ কেজি আম পাঠানো হয়েছে সুইজারল্যান্ডে। পর্যায়ক্রমে আরও তিন মেট্রিক টন আম রপ্তানি করা হবে সুইডেন ও কাতারে।
আমচাষি মমিনুল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার পরামর্শে একর জমিতে ব্যানানা, বারি ফোর, কাটিমন ও বিএন সেভেন জাতের আমের বাগান গড়ে তোলেন। সম্পূর্ণ জৈব সার ও বালাইনাশক ব্যবহার করেই বাগান পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত বছর গাছে কিছু আম ধরলেও এবার ব্যাপক ফলন হয়েছে। শুধু ব্যানানা জাতের গাছেই প্রতি গাছে ১০০ থেকে ২৫০টি পর্যন্ত আম ধরেছে। আমের আকৃতি ও রঙ চমৎকার হওয়ায় এর বাজারে চাহিদাও বেশি।
প্রথম দফায় ২১ জুন ১০০ কেজি আম রপ্তানির জন্য ক্যারেটে করে সুইজারল্যান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে ১৮ একর জমিতে প্রায় সাত হাজার ৫৬০টি আমগাছ রয়েছে এবং এতে ২৫ থেকে ৩০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাগান থেকেই প্রতি কেজি ব্যানানা আম ১২০–১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দিনাজপুর শহরসহ দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা বাগানে এসে আম কিনছেন।
মমিনুল ইসলাম আরও জানান, গত বছর ইংল্যান্ডে আম পাঠানোর পর এবার কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ নির্দেশনায় সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও কাতারে আম পাঠানোর অনুমতি পেয়েছি। আশা করছি, ইউরোপের আরও দেশ থেকেও অর্ডার আসবে।
ক্রেতা ও দিনাজপুর শহরের কলেজ শিক্ষক মো. নাজমুল হাসান বলেন, গত বছর দুই কেজি কিনেছিলাম, এবার খেতে ভালো লাগায় পাঁচ কেজি নিয়েছি আত্মীয়দেরও দেওয়ার জন্য।
বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, কৃষি সম্ভাবনাময় উপজেলা হিসেবে বিরল ইতোমধ্যে সুনাম অর্জন করেছে। এখানে আগে থেকেই প্রচুর লিচু উৎপাদন হত। এখন আম উৎপাদনও উন্নতি বেড়েছে। ইতোমধ্যে অনেক চাষি আম চাষে উৎসাহিত হয়ে বড় বড় বাগান গড়েছেন। গত বছর এখান থেকে ইংল্যান্ডে প্রথম আম পাঠানো হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালে আমরা তিনটি দেশ থেকে আম রপ্তানির সুযোগ পেয়েছি। এরই অংশ হিসেবে ১০০ কেজি ব্যানানা আমের প্রথম চালান পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও তিন মেট্রিক টন পাঠানো হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, দিনাজপুরে উৎপাদিত ব্যানানাসহ কয়েকটি জাতের আম গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে রপ্তানি করা হয়। চলতি বছর ইউরোপের কয়েকটি দেশ ফলটি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাই চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করে আম সংগ্রহ ও রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।