৩০ দিনে ৩৫টি চুরি, আতঙ্কে বদলগাছীর মানুষ

চুরি আতঙ্কে রয়েছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলাবাসী। এই উপজেলায় হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে চুরির ঘটনা। এক রাতেই হচ্ছে তিন থেকে চার জায়গায় চুরি। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় এক দোকানে চুরি করতে এসে আটক হয় এক চোর। তার দেওয়া তথ্যমতে রাতে আরও তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
এর আগে গত বুধবার রাতে তিনটি দোকান ও একটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। আর এভাবেই গত এক মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩৫টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব চুরি বেশি হচ্ছে উপজেলার বাজার ও দোকানপাটে। বাদ যাচ্ছে না গ্রামীণ বাড়িঘরও। এ অবস্থায় নিরাপত্তায়হীনতায় আর হতাশায় দিন কাটছে উপজেলার মানুষের। স্থানীয়রা বলছেন, চুরির মালামাল উদ্ধার ও চোরদের আটক না করায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে তারা। আর পুলিশ বলছে, চুরির রহস্য উৎঘাটনসহ চোরকে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০ আগষ্ট রাতে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শরিফুলের মুদি দোকান, উপজেলার মোড়ে সোহাগের চায়ের দোকান, বাজার এলাকায় মাসুদের মুদি দোকান এবং হটাৎপাড়া এলাকার মজিদুলের বাড়ির ওয়াটার পাম্প চুরি হয়।
এর আগে গত ১০ আগস্ট রাতে বাজার এলাকার বড় মুদি দোকানের দেওয়াল ভেঙে চুরি হয়। এর দুদিন পর আরেক বড় মুদি দোকানের টিন খুলে মালামাল চুরি হয়। এ ছাড়া গত ৭ আগস্ট সবজি দোকানদার সুমন হোসেনের মোটরসাইকেল চুরি হয়। গত ২৮ জুলাই উপজেলার খাদ্যগুদামের সামনে একটি দোকানের ইটের দেওয়াল ভেঙে মালামাল চুরি হয়। এর তিন থেকে চার দিন পর মথুরাপুর ইউপির সদস্য পরিমল চন্দ্রের বাড়ির লোহার গ্রিল কেটে মোটরসাইকেল ও গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এভাবেই গত এক মাসে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অন্তত ৩৫ টি চুরির ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সানজাদ রয়েল সাগর বলেন, দোকান ভেঙে নগদ টাকা আর মালামাল নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি।
আরেক ভুক্তভোগী সবজি ব্যবসায়ী সুমন হোসেন বলেন, আমার মোটরসাইকেল চুরি হওয়ার পর থানায় গিয়েছি জিডি করার জন্য। পুলিশ জিডি না নিয়ে অভিযোগ দিতে বলে। সেই মোতাবেক অভিযোগ করেছি।
মুদি ব্যবসায়ী শরিফুল হোসেন বলেন, যেভাবে দিনের পর দিন চুরি হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে আমরা কীভাবে ব্যবসা করব।
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, চুরির ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে, আমরা চোরকে ধরতে কাজ করছি। এখন পর্যন্ত কোনো চুরির ঘটনার রহস্য উৎঘাটন বা চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মালামাল উদ্ধার হয়নি, তবে আমরা আশাবাদী চোরসহ চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার হবে খুব তাড়াতাড়ি। চারজন আটক আছে। আজ দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফারজানা আক্তার বলেন, এতগুলো চুরির তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে ওসি বদলগাছীর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে জানাতে পারব।