দিনাজপুরে দুই যুবকের গড়া দেশের সবচেয়ে বড় আনার বাগান

বিদেশি ফল আনার চাষের কৌশল শিখতে ভারতের মুম্বাইয়ের একটি কৃষি খামারে প্রশিক্ষণ নেন দিনাজপুরের নাদিম হোসেন (৩৫) ও তার বন্ধু মনিরুজ্জামান চৌধুরী (৩৬)। প্রশিক্ষণ শেষে আনারের চারা নিয়ে দেশে ফিরে চার বছর আগে তারা বাগান গড়ে তোলেন।
শুরুর দিকে অনেকে নিরুৎসাহিত করলেও আজ তারা দেশের সর্ববৃহৎ আনারের বাগানের উদ্যোক্তা। দিনাজপুর সদরের রানীগঞ্জ বেলবাড়ী গ্রামে চার একর জমিতে তাদের ‘গ্রিন লিফ অ্যাগ্রো ফার্মে’ ১ হাজার ১০০ আনার গাছ রোপণ করা হয়। প্রথম বছর ফলন না হলেও এবার গাছভরা আনারে ঝুলছে থোকা থোকা ফল।
পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ৬০টি আনার ধরেছে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এ মৌসুমে অন্তত ১৩ থেকে ১৪ লাখ টাকার আনার বিক্রির আশা করছেন তারা। ইতোমধ্যে পাইকাররা আগ্রহ প্রকাশ করেছে, আগস্টের শেষ দিক থেকে বাজারজাত শুরু হবে।
উদ্যোক্তা নাদিম হোসেন জানান, রোগবালাই না থাকলে একটি গাছ ৩০ বছর পর্যন্ত ফলন দিতে পারে। যত দিন যাবে ফলন তত বাড়বে। আগামীতে বাগান সম্প্রসারণ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যও রয়েছে। তাদের সফলতার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বাগান দেখতে আসছেন। অনেকেই আনার চাষে আগ্রহী হয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।
দিনাজপুর হর্টিকালচার বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানান, বাংলাদেশে এত বড় আনারের বাগান আর কোথাও নেই। এই বাগানের সফলতা অর্জনে উদ্যোক্তা দুই যুবককে হর্টিকালচার বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
সদর উপজেলা কৃষি দপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা মো. আবু বোরহান জানান, বেশ ঝুঁকি নিয়ে দুই বন্ধু মিলে আনার বাগানটি গড়ে তুলেছেন। কৃষি উদ্যোক্তা ওই যুবকদের বাগান করায় সদর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফজাল হোসেন জানান, পরীক্ষামূলকভাবে দিনাজপুরে আনারের বাগান গড়ে উঠেছে। এই বিদেশি ফল চাষে তাদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে আনার চাষে যেহেতু সফল হওয়া গেছে তাই আশা করা যায় জেলায় আনার চাষের বেশ সম্ভাবনা রয়েছে। এই বাগান দেখে তরুণ ও যুবকেরা আনার চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।