সাবেক এমপির ব্যক্তিগত স্বার্থে ফাঁকা স্থানে ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ

মানুষের যাতায়াতের কোনো সড়ক নেই, নেই চলাচলের প্রয়োজনও। তবুও সাবেক সংসদ সদস্যের (এমপি) ব্যক্তিগত স্বার্থে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের সাতানী গ্রামে খাল ও ডোবার ওপর নির্মাণ করা হয়েছে দুটি ব্রিজ। ব্যয় হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে নির্মাণের পর থেকেই ব্রিজ দুটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের মাধ্যমে ব্রিজ দুটি নির্মাণ করা হয়। কাজ বাস্তবায়ন করেছে ‘রুকাইয়া ট্রেডার্স’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাতানী গ্রামের এবিএম রুহুল আমিন জামে মসজিদ কমপ্লেক্সের পাশে জোমাদ্দার বাড়ির সামনের খালের ওপর ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৩৪৩ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। এর মাত্র ৫০ মিটার দূরে ডোবার ওপর নির্মাণ করা হয় আরেকটি ব্রিজ, যার ব্যয় প্রায় ৩৩ লাখ টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাতানী গ্রামের খোকন জোমাদ্দারের বাড়ির সামনে নির্মিত ব্রিজটির দুই প্রান্তে কোনো রাস্তা নেই। ব্রিজ পেরোলেই দেখা মেলে ধানের ক্ষেত আর ঝোপঝাড়। সড়ক সংযোগ না থাকায় ব্রিজটি অলস পড়ে আছে। একই অবস্থা অন্য ব্রিজটিরও।
স্থানীয়রা জানান, সাবেক জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ওই এলাকায় বিশাল এলাকা জুড়ে টিনের বেড়া দিয়ে ব্যক্তিগত কমপ্লেক্স গড়ে তুলেছেন। সেখানে তিনি নিজের নামে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছেন। ভবিষ্যতে ওই কমপ্লেক্সে যাতায়াতের সুবিধার জন্যই সরকারি অর্থে এই ব্রিজ দুটি নির্মাণ করানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ হাওলাদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে কোনো সড়ক নেই, মানুষেরও কোনো প্রয়োজন নেই। এমপি তার ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকারের টাকা দিয়ে ব্রিজ দুটি করিয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষের কোনো লাভ হয়নি, উল্টো সরকারের ৬৯ লাখ টাকা অপচয় হয়েছে।
দুমকি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, সাবেক এমপির ডিও লেটারের ভিত্তিতে সাতানী গ্রামে দুটি ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। তখন আমি এখানে ছিলাম না। সাবেক পিআইও প্রকল্পটি নেন। আমি যোগদানের পর নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কাজ বাস্তবায়ন করেছি।