গোপালগঞ্জে শ্রেণিকক্ষে দুর্গন্ধে ২০ শিক্ষার্থী অসুস্থ

শ্রেণিকক্ষে চলছিল পাঠদান। এরই মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের নাকে আসে তীব্র দুর্গন্ধ। এটি ছিল অবিকল কীটনাশকের গন্ধের মতো। আর এতে অসুস্থ হয়ে পড়ে ২০ শিক্ষার্থী। অবস্থা বেগতিক বিবেচনায় তাৎক্ষণিক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল বেলা পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার নারিকেল বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এ সময় স্থানীয়ভাবে ১২ শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেশি শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থ আট শিক্ষার্থীকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীরা হলো নারিকেলবাড়ি গ্রামের রিপন বৈদ্যের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ঝিলিক বৈদ্য (১৪), রফিকুল ইসলামের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ খন্দকার (১২), সুরঞ্জন বৈদ্যের মেয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী স্মৃতি (৯), বদরতলা গ্রামের আবির বাড়ৈর মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ঝুমা বাড়ৈ (১৩), হাজরাবাড়ি গ্রামের মাখন লালের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রোদেলা (১৪), ভূতেরবাড়ি গ্রামের লুৎফর মীরের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিয়ান্তা মীর (১৬) ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিতা হালদার (১৪)।
ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুপ্রিয়া খানম (১২) জানায়, নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্রথম ক্লাস শেষে দ্বিতীয় ক্লাসে গণিত পড়ানো হচ্ছিল। ক্লাস শুরুর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর হঠাৎ করে জানালা দিয়ে একটা বিষাক্ত গন্ধ আসে। এতে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। সবাই শ্বাসকষ্টে আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নেমে স্কুল মাঠে চলে আসে। এরই মধ্যে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেরী দেবারতী বলেন, আমি পাশের ভবনে রাউন্ডে ছিলাম। হঠাৎ হইচই শুনে ছুটে আসি। দেখি সবাই ছোটাছুটি করছে। অনেকে শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয়ভাবে ১২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরপর বেশি শ্বাসকষ্টজনিত আটজনকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক দুলাল মধু বলেন, জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষে কীটনাশকের মতো গন্ধ আসে। এতে শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সব শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ থেকে বাইরে বের হয়ে আসে। এ সময় শিক্ষার্থীদের চিৎকারে বিদ্যালয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয়ের চারদিকে অনুসন্ধান করেও দুর্গন্ধের কোনো উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কুমার মৃদুল দাস বলেন, শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের অবজারবেশনে রাখার এক ঘণ্টা পর ছেড়ে দেই। দুর্গন্ধে হয়তোবা আতঙ্কিত হয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে ভয়ের কোনো কারণ নেই।