কালিয়ায় অসময়ের তরমুজ চাষে কৃষকের ভাগ্য বদল

নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় অফ সিজনে তরমুজ চাষ করে কৃষকরা বাড়তি আয় করছেন। কম খরচে বেশি ফলন এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। এই সাফল্যের কারণে তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন আরও অনেকে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, হাইব্রিড জাতের তরমুজ আবাদে কৃষকদের সার, বীজ ও পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কালিয়ায় প্রায় ১১ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ১৫ টন ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার ছোটকালিয়ার গোবিন্দনগর, সালামাবাদ ইউনিয়নের ভাউরীর চর, বাঐসোনা ইউনিয়নের দুধকুড়া বিল ও ভক্তডাঙ্গা বিলে মৎস্য ঘেরের পাড়ে মাচায় বিশেষ জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাচায় ঝুলছে বিভিন্ন জাতের তরমুজ। এর মধ্যে এশিয়ান-২ ও তৃপ্তি। কৃষকদের মতে, এশিয়ান-২ দেশীয় জাত হলেও খেতে সুস্বাদু। তবে তৃপ্তি জাতের তরমুজ স্বাদে এগিয়ে। একরপ্রতি খরচ হয় মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত।
চাষি প্রদীপ কুমার বর্মণ জানান, তিনি ১৫০ বিঘা মৎস্য ঘেরের পাড়ে ১০ হাজার তরমুজ চারা রোপণ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা। তিনি আশা করছেন ৪০ হাজার কেজি তরমুজ বিক্রি করে ভালো মুনাফা করবেন।
ভাউরীর চর এলাকার বাসিন্দা ও নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শেখ কামাল হোসেন বলেন, কৃষি অফিসের সহায়তায় খুলনার ডুমুরিয়া থেকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি গাছবাড়িয়া বিলে ২১ বিঘা জমিতে প্রায় ৬০০ চারা রোপণ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। আর তিনি প্রায় ৩ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রির আশা করছেন।
কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইভা মল্লিক জানান, তরমুজ এখন আর মৌসুমি ফল নয়, সারা বছরই চাষ করা যায়। মাত্র ৭০ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির আওতায় কালিয়ায় অফ সিজন তরমুজ চাষ ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন শেখ বলেন, আগাম ও অফ সিজনে এ ধরনের ফসলের চাষ আধুনিক কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে। কৃষকরা লাভবান হলে দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।