প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, বুয়েটে পরীক্ষা বয়কট
দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল বুধবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন। ঘোষণা অনুযায়ী, বুয়েটসহ দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন কর্মসূচি পালন করার কথা বলা হয়। তবে বুয়েটে আজ বৃহস্পতিবার এমনিতেই সাপ্তাহিক বন্ধ।
বুয়েটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিমুল ইসলাম বলেন ‘বৃহস্পতিবার আমাদের সাপ্তাহিক ছুটি। তবে শুক্রবার ছাড়া বাকি সব দিন আমাদের পরীক্ষা হয়। আমাদের আজকের পরীক্ষা আমরা বয়কট করেছি এবং আমাদের শাটডাউন কর্মসূচি চলছে।’
নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েকটি বিভাগে কর্মকর্তা–কর্মচারীরা এসেছেন। তবে গতকাল থেকেই শাটডাউন চলছে।
তিন দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। একপর্যায়ে তাঁরা বেলা দেড়টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যেতে শুরু করেন। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় তাঁদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। তখন লাঠিপেটার ঘটনাও ঘটে। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশের লাঠিপেটার পর তাঁরা বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তারা আবারও শাহবাগে জড়ো হন। রাত ১০টার পর তাঁরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে যান।
গতকাল রাতেই শাহবাগে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ওয়ালী উল্লাহ আজ বিকেল পাঁচটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের কাউন্সিল হলে সভা হবে বলে জানান। সেখানে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ওই সময় বুয়েটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ দেশের সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন অব ইঞ্জিনিয়ার্স ঘোষণা করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো নবম গ্রেড সহকারী প্রকৌশলী পদে কেবল পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ ও ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার করা; দশম গ্রেডে শুধু ডিপ্লোমাধারীরা আবেদন করতে পারেন, সেখানে যেন উচ্চ ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা এবং শুধু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং যাঁরা সম্পন্ন করবেন, তাঁরাই যেন প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ার) লিখতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।
অপরদিকে প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তিদের পেশাগত দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য গতকালই একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। যদিও সেটি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি রাখাসহ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন।