জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ইসির কর্মপরিকল্পনায় যা যা আছে

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে নির্বাচন কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।
আখতার আহমেদ বলেন, কর্মপরিকল্পনা যে কাজগুলো আছে তা একটার সঙ্গে আরেকটা যুক্ত। ইতোমধ্যে এর মধ্যে কিছু কিছু কাজ শুরু করা হয়েছে। এ কর্মপরিকল্পনা ২৪টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ। সেপ্টেম্বরে শেষ সপ্তাহে থেকে যা শুরু হবে। শেষ হতে সময় লাগবে দেড় মাস। ভোটার তালিকা হালনাগাদ। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ধাপের সম্পূরক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যা চূড়ান্ত করা হবে ৩১ আগস্ট। আর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩০ নভেম্বর। এর জন্য খসড়া প্রকাশ হবে পহেলা নভেম্বর।
সকল আইনবিধি ৩১ আগস্টের মধ্যে সংশোধনের প্রস্তাব ও প্রণয়ন। এছাড়া সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন সংশোধন, ভোটার তালিকা আইন সংশোধন, সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র নীতিমালা ও ব্যবস্থাপনা চূড়ান্ত, দেশি, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সংবাদিক নীতামালা চূড়ান্ত, নির্বাচন পরিচালনা (সংশোধন) ২০২৫ প্রতীকসহ, নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন ১৯৯১, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯ এগুলো আইন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন আছে, যা ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার আশা। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত।
সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জিআইএস ম্যাপ প্রস্তুত ও প্রকাশ।
পর্যবেক্ষক নিবন্ধন ২২ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত করে ১৫ নভেম্বর নিবন্ধন সনদ প্রদান। বিশেদি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমতি প্রদানে যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করা হবে ১৫ নভেম্বর মধ্যে। এছাড়া ১৫ নভেম্বর মধ্যে নির্বাচনি তথ্য প্রচারের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়, টিএন্ডটি, বিটিআরসিসহ বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সঙ্গে সভা করবে ইসি।
নির্বাচনি ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা, পোস্টার ইত্যাদি মুদ্রণ শেষ করা হবে ১৫ সেপ্টেম্বর মধ্যে। নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ২৯ আগস্ট থেকে ভোটগ্রহণের ৪ থেকে ৫ দিন আগে যাবতীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ করবে ইসি। নির্বাচনের সকল প্রকার মালামাল সংগ্রহ ও বিতরণ কার্যক্রম শেষ করা হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। ব্যবহার উপযোগী স্বচ্ছ ব্যালট চূড়ান্ত করা হবে ৩০ নভেম্বর মধ্যে। ১৫ নভেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাজেটে চূড়ান্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুকূলে অর্থ বরাদ্দে জন্য বৈঠক ১৬ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর মধ্যে। নির্বাচনের জন্য জনবল ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ৩০ মধ্যে সম্পন্ন করতে চায় ইসি।
এ ছাড়া ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতি শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম সভা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য কার্যাবলি গ্রহণ করবে ধাপে ধাপে। নির্বাচনের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবে ৩১ অক্টোবর। ৩১ অক্টোবরের আইসিটি সংক্রান্ত সকল কাজ শেষ করতে চায় কমিশন। ইসি সচেতনতামূলক প্রচারকাজ শেষ করতে চায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে। এছাড়া টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখা, ফলাফল কীভাবে প্রকাশ ও প্রচার করা হবে, বেসরকারি ফলাফল প্রচার সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্ধারণ। ২০২৬ সালের জানুয়ারি মধ্যে প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করা।
উল্লেখ্য, আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সংক্রান্ত চিঠিও দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে।
সিইসিও বলেছেন, ভোটের তারিখের প্রায় দুই মাস আগে তফশিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন কমিশন সভায় আলোচনা শেষে জানানো হয়, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফশিল দেবে ইসি।