বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের আরও বেশি পণ্য আমদানির আহ্বান ডিসিসিআইর
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৯৪ শতাংশই তৈরি পোশাক নির্ভর, যার পরিমাণ পাঁচ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে বাংলাদেশের রপ্তানির সম্ভাবনাময় পণ্য সমূহ আরও বেশি হারে আমদানির জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানান ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
আজ রোববার (২ জুন) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুকের সাথে ডিসিসিআইর দ্বিপাক্ষিক মতবিনিময় সভায় ডিসিসিআই সভাপতি এসব কথা বলেন।
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারকে স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৪১৫ দশমিক ৩২ মিলিয়ন এবং ৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির তৃতীয় বৃহত্তম গন্তব্যস্থল হলো যুক্তরাজ্যের বাজার, এছাড়াও সেদেশের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় তিন দশমিক শূন্য চার বিলিয়ন ডলার। ফাইন্যান্স, স্বাস্থ্যসেবা, ফিনটেক, বিপিও, বিপিএস, পর্যটন ও শিক্ষাখাতে দুদেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
আশরাফ আহমেদ বলেন, টেকনিক্যাল নো-হাউ, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবন ও দক্ষতা উন্নয়ন, আর্টিটেকচার এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে যৌথ বিনিয়োগের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরে সরকারি পর্যায়ের উদ্যোগ গ্রহণেরও দাবি জানান। বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রাধিকার বিষয়সমূহ যেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রাধিকার পায়, সে বিষয়সমূহকে প্রাধান্য দেওয়ার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক বিনিয়োগ যত সম্প্রসারিত হবে, দুদেশের বেসরকারিখাতের মধ্যকার সমন্বয় আরও বৃদ্ধি পাবে।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, অর্থনৈতিক ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে যুক্তরাজ্য অত্যন্ত আগ্রহী। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাঁর দেশ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তবে এলডিসি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার ধরে রাখতে হলে বাংলাদেশকে তৈরি পোশাক ছাড়াও অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের কোন বিকল্প নেই।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, কৃষি, সি-ফুড, চামড়াজাত পণ্য এবং হালকা-প্রকৌশল বিশেষ করে বাইসাইকেল প্রভৃতি পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে রপ্তানির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখার উপর অধিক হারে মনোনিবেশ করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সংশ্লিষ্ট নীতি সহায়তা ও নীতির ধারাবাহিকতা একান্ত অপরিহার্য। সেই সাথে পণ্যের মেধাস্বত্ব সুরক্ষা, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) কার্যকর ব্যবহার ও ব্যবসায়িক মুনাফা প্রত্যাবর্তন প্রভৃতি বিষয়ে বাংলাদেশকে আরও মনোযোগী হতে হবে।
ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী সহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।