ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফর
স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে প্রাধান্য পাবে ইউক্রেন-গাজা

রাজকীয় আতিথেয়তা ও জাঁকজমকপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতার পর এবার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মধ্য দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরের দ্বিতীয় দিন শুরু হচ্ছে। স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক হবে। সেই আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বাণিজ্য, ইউক্রেন ও গাজা সংকটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যু। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
স্টারমার তার গ্রামীণ বাসভবন চেকার্সে ট্রাম্পকে স্বাগত জানাবেন। ইতোমধ্যেই তিনি মার্কিন নেতা ও ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন গড়ে তুলেছেন। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের কাছ থেকে আরও প্রতিশ্রুতি আদায় করাই তার প্রধান লক্ষ্য।
এর আগে গত মে মাসে হোয়াইট হাউসে ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির চুক্তি‘ স্বাক্ষরের মাধ্যমে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধে কিছুটা নমনীয়তা অর্জন করেছে যুক্তরাজ্য। ফলে ট্রাম্পের সঙ্গে স্টারমারের সম্পর্ক বেশ উষ্ণ-ই বলা চলে।
যুক্তরাজ্য আশা করছে, তাদের অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। তবে ট্রাম্পের মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, এ বিষয়ে এখনই কোনো চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ট্রাম্প যুক্তরাজ্যে সফরের আগে বলেছিলেন, আমরা দেখতে চায় আরও ভালো কোনো চুক্তি করা যায় কিনা। তাই আমরা তাদের (যুক্তরাজ্য) সঙ্গে কথা বলব।‘
তবে এই সফর চলাকালীনই স্টারমারের জন্য ইতিবাচক খবর এসেছে। মার্কিন কোম্পানি ব্ল্যাকস্টোন আগামী এক দশকে যুক্তরাজ্যে ৯ হাজার কোটি পাউন্ড বিনিয়োগের পরিকল্পনা জানিয়েছে। একই সঙ্গে মাইক্রোসফট দেশটিতে ৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ জিএসকে আগামী পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

অন্যদিকে এই বৈঠকটি কয়েকটি কারণে কিছুটা অস্বস্তিকর হতে পারে। স্টারমার সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে বরখাস্ত করেছেন। যিনি জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে বিতর্কিত সম্পর্কের কারণে সমালোচিত হয়েছিলেন। এপস্টেইনের ঘটনাটি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ট্রাম্পকেও তাড়া করছে।
তবে ট্রাম্পের সফরের প্রথম দিনটি ছিল সম্পূর্ণ রাজকীয় আড়ম্বরের। রাজা তৃতীয় চার্লস উইন্ডসর ক্যাসেলে ট্রাম্পকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। এ সময় তোপধ্বনি, অশ্বারোহী ও ব্যাগপাইপের অনবদ্য পরিবেশনা ছিল। সন্ধ্যায় এক রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে রাজা ও রানীর সঙ্গে ট্রাম্প ও মেলানিয়া ট্রাম্প অংশ নেন।
সেখানে ট্রাম্প তার বক্তব্যে যুক্তরাজ্য সফরকে জীবনের ‘সর্বোচ্চ সম্মানের একটি’ বলে অভিহিত করেন। যদিও এই রাজকীয় আয়োজনের বিপরীতে যুক্তরাজ্যের সাধারণ জনগণের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কম। ফলে এই সফরের বিরোধিতা করে প্রায় ৫ হাজার মানুষ লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ করে।