দেশ ছাড়লেন ভিসি রোস্তম আলীর প্রধান সহযোগী সাবেক প্রক্টর প্রীতম!

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সাবেক প্রক্টর ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রীতম কুমার দাস গোপনে দেশ ছেড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ শনিবার বিষয়টি জানাজানি হলে টক অব দ্য ক্যাম্পাসে পরিণত হয়।
পাবিপ্রবির বিভিন্ন সূত্র জানায়, সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর মেয়াদের প্রায় পুরো সময় তিনি প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। গবেষণা-প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন বেঞ্চ নির্মাণে অর্থ আত্মসাৎ, বিজ্ঞাপন প্রদান কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে প্রায় কোটি টাকার বিজ্ঞাপন প্রদানে অনিয়ম, নিজ বিভাগের ল্যাবরেটরির বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। নামে-বেনামে সম্পদও করেছেন বলে জানা গেছে।
এসব বিষয়ে তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে নতুন উপাচার্য যোগদানের আগে তড়িঘড়ি করে কাউকে না জানিয়ে আমেরিকায় পারি জমিয়েছেন সাবেক প্রক্টর প্রীতম!
সূত্র জানায়, প্রীতম কুমার দাসের একাধিক গবেষণা-প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তির প্রমাণ মিলেছে সফটওয়ার টার্ন ইট ইনের যাচাইয়ে। তা ছাড়া সাবেক ভিসির কাছের মানুষ হিসেবে নিয়োগ, উন্নয়ন প্রকল্প তদারকি করতে গিয়ে নানা কাজে নানা অনিয়ম ও অর্থ লেনদেনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ সংস্কারের নামে ১০ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করে নয়-ছয় করেছেন মর্মে অভিযোগ ওঠে। তা ছাড়া বিজ্ঞাপন প্রদান কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বিভিন্ন অখ্যাত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান, একই বিজ্ঞাপন বারবার প্রদান করে প্রায় এক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম করেছেন তিনি। এসব বিষয়ে তদন্তের কথা শুনে তিনি কিছুদিন ধরে বিপর্যস্ত ছিলেন। অবশেষে কাউকে না জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি না নিয়ে এবং মন্ত্রণালয়ের জিও ছাড়াই অতি গোপনে আমেরিকায় চলে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিজন ব্রহ্ম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি না নিয়ে এবং মন্ত্রণালয়ের জিও ছাড়াই গোপনে দেশ ছাড়ায় বিধিসম্মতভাবে তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন উপাচার্য যোগদানের পর তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করা হবে এবং কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রীতম কুমার দাসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। তবে তার ফেসবুক পেজে আমেরিকা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার ঘনিষ্টজনরা জানিয়েছেন, উচ্চতর ডিগ্রির জন্য তিনি আমেরিকায় গেছেন।