রাবির সাবেক প্রোভিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ঢাকাস্থ অতিথি ভবনের জমি কেনায় দুর্নীতি হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে সাবেক উপ-উপাচার্য (প্রোভিসি) অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশ প্রাপ্তির সাতদিনের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী গোলাম রব্বানী এ নোটিশ পাঠান। তাঁর একটি কপি আজ শনিবার গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে আসে।
নোটিশে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং সাবেক উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহানের নেতৃত্বে ঢাকাস্থ অতিথি ভবনের জন্য জমি ক্রয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্তের জন্য গত ২০১৭ সালের জুলাই মাসের ২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সাধারণ সভার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সার্বিক তদন্ত ও পর্যালোচনা শেষে পর্যবেক্ষণসহ চৌধুরী সারওয়ার জাহানের নেতৃত্বে ঢাকাস্থ অতিথি ভবনের জন্য জমি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিকে দায়ী করে তদন্ত কমিটি। তাঁরা গত ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে।
এতে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রফিকুল হাসানের আইনগত মতামত উপেক্ষা করে ঢাকাস্থ অতিথি ভবনের জন্য তিন কোটি ৫০ লাখ টাকায় জমি খরিদ করা হয় বলে প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়। যার সাফ কবলা দলিল গত ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের ২০ তারিখে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু জমির প্রকৃত ক্রয় মূল্য তিন কোটি ৫০ লাখ টাকা গোপন করে দলিল রেজিস্ট্রেশনের ৩৭ দিন পরে জমির মূল্য ১১ কোটি দেখিয়ে বিক্রেতার সঙ্গে একটি অরেজিস্ট্রিকৃত চুক্তিপত্র সৃজন করা হয়। এক্ষেত্রে চৌধুরী সারওয়ার জাহানের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি সুস্পষ্টভাবে সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে প্রতীয়মান হয়।
লিগ্যাল নোটিশে গোলাম রব্বানী বলেন, রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী প্রত্যেকটি হস্তান্তর দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে। তাই ঢাকাস্থ অতিথি ভবন নির্মাণের উদ্দেশে ক্রয়কৃত জমির সাফ কবলা দলিল গোপন করে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে সম্পাদিত চুক্তিনামাটি সম্পূর্ণভাবে বেআইনি, অবৈধ ও ভিত্তিহীন। সেক্ষেত্রে দলিলে উল্লেখিত জমির প্রকৃত মূল্য তিন কোটি ৫০ লাখ টাকা বাদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জমির মূল্য বাবদ গৃহীত অতিরিক্ত সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা কমিটির নিকট হতে আদায়যোগ্য। এ ছাড়া অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটনের দায়ে অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান ও তাঁর কমিটির সদস্যদের শাস্তির মুখোমুখি করা আবশ্যক।
নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যকে উদ্দেশ করে বলা হয়, নোটিশপ্রাপ্তির সাতদিনের মধ্যে ঢাকাস্থ অতিথি ভবনের জন্য জমি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং আত্মসাৎকৃত সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং যার আইনগত সব দায়দায়িত্ব উপাচার্যকে বহন করতে হবে।
তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।