ববি উপাচার্যের বাসভবনে তালা, উত্তাল ক্যাম্পাস

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিনের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল ক্যাম্পাস। এবার উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (৭ মে) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করেন। এরপর দুপুর ২টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যান ও বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আশেক এলাহী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছি। কারণ তার কর্মকাণ্ড জুলাই বিপ্লবের সাথে সাংঘর্ষিক। তিনি সময়মতো বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন নতুন যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের গেটে তালা ঝুলবে।’
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ অভিযোগ করেন, ‘জুলাই বিপ্লবে যারা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, তাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করেছেন এই উপাচার্য। অন্যদিকে, যারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন, তাদের নানাভাবে হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে।’
উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ তুলে মাসুম বিল্লাহ আরও বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী একজন উপাচার্যের সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে থাকার কথা থাকলেও আমাদের উপাচার্য বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। ফলে প্রশাসনিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হচ্ছে না। সাত মাসের পর্যবেক্ষণে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, বর্তমান উপাচার্যের অধীনে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয়।’
এদিকে চলমান অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে উপাচার্যকে প্রধান অতিথি করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) একটি সভা পণ্ড করে দিয়েছেন কর্মকর্তাদের একাংশ।
এছাড়া ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট ড. আবদুল আলিম বছির এবং জীবনানন্দ দাশ রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক সঞ্জয় কুমার সরকার তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন।
দুই সপ্তাহের বেশি দিন ধরে চলমান আন্দোলন গত রোববার এক দফা দাবিতে রূপ নেয় উপাচার্যের অপসারণ। এই আন্দোলনে ববির সব সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সংহতি প্রকাশ করেছে।