৩৫ বছর পর চাকসুর তফসিল, ভোটগ্রহণ ১২ অক্টোবর

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১২ অক্টোবর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অডিটরিয়ামে অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের এই তফসিল ঘোষণা করেন।
চাকসু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এর আগে ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ১৯৯০ সালের পর ছাত্র সংগঠনগুলোর সংঘাত ও মুখোমুখি অবস্থানের কারণে প্রশাসন আর কোনো নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নেয়নি। ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়ে চাকসু।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর চবি ক্যাম্পাসে সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলো চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে চাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়।
সংশোধিত গঠনতন্ত্রে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। সংসদের মেয়াদকাল রাখা হয়েছে এক বছর, আর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যসংখ্যা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৮।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১ সেপ্টেম্বর খসরা ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। খসরা ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি গ্রহণ চলবে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
মনোনয়নপত্র বিতরণ ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৭ সেপ্টেম্বর।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। এরপর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে ২১ সেপ্টেম্বর।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।
এরপর ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে।
তফসিল ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ২৫ সেপ্টম্বর থেকে শুরু হওয়া পূজার এক সপ্তাহের ছুটিতে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন। এবার নির্বাচনে ১৪টি ভোটকেন্দ্রে শিক্ষার্থী ভোট দেবে।
তফসিল ঘোষণা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বলেন, “চাকসু নির্বাচন নিয়ে এবারও শিক্ষার্থীদের একটা অবিশ্বাস ছিল যে প্রশাসন চাকসুর ইলেকশন করবে কি না। তাদের ‘কনফিডেন্সের’ অভাব ছিল। সেটি স্বাভাবিক।”
অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আরও বলেন ‘প্রশাসন তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর, কোনো কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাকসু নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করবে না। আমরা শিক্ষার্থীদের এ গণতান্ত্রিক ধারা চালু করতে চাই।’