ইরানে ফের বিক্ষোভ, মাহসা আমিনির বাবা আটক
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/09/17/iraan-thaamb.jpg)
ইরানে পুলিশ হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর এক বছর পূর্ণ হয়েছে। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা করতে তার পরিবারকে বাধা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মাহসা আমিনির বাবা আমজাদ আমিনিকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশে বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। আজ রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অধিকার গোষ্ঠী কুর্দিস্তান হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্কের (কেএইচআরএন), দ্য ফিফটিন হান্ড্রেড তাসবির মনিটর ও নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএইচআর) তথ্যমতে, শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে পশ্চিম ইরানের সাকেজে শহরের পারিবারিক বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন মাহসা আমিনির বাবা আমজাদ আমিনি। এরপরেই তাকে আটক করা হয়। নিহত মেয়ে মাহসা আমিনির কবরের পাশে কোনো ধরনের স্মরণসভা বা অনুষ্ঠান না করার সতর্কতা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, আমজাদ আমিনিকে আটক করা হয়েছে।
পরে ইরনার আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, আমজাদ আমিনিকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল। আর এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে হিজাব ইস্যুতে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ২২ বছরের মাহসা আমিনি। পুলিশ হেফাজতেই তার মৃত্যু হয়। এরপরেই দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে। মাহসা আমিনির মৃত্যুতে নিন্দা জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক মহল।
অধিকার গোষ্ঠীগুলোর তথ্যমতে, পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে দেশটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। পাশাপাশি কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী আহত ও গ্রেপ্তার হয়েছে। বিক্ষোভ সম্পর্কিত ঘটনায় সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ইরানের আদালত।
এদিকে, শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ছিল মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। এদিন দেশটির প্রধান প্রধান শহরগুলোতে নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ শহরগুলোতে বিক্ষোভের চেষ্টা কররে বাধা দেয় নিরাপত্তাকর্মীরা।
বিক্ষোভের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাজধানী তেহরানের একটি প্রধান সড়কে জড়ো হচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। এক তরুণ স্লোগান দিচ্ছে ও আশেপাশে থাকা গাড়ির ড্রাইভাররা হর্ন বাজিয়ে সমর্থন দিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে মোহাম্মাদি নামের একজন দাবি করেন, ইরানের খ্যাতিমান অধিকারকর্মী নার্গেস মোহাম্মাদি ও আরও তিনজন নারী তেহরানের এভিন কারাগারের প্রাঙ্গণে তাদের হিজাব পুড়িয়ে মাহসা আমিনির মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করেন।
অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, মাহসা আমিনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তেহরানের বাইরে, নারী বন্দিদের রাখা কোয়ারচাক কারগারে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দমাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জোর প্রচেষ্টা চালায়। এ সময় সেখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
কুর্দিস হিউম্যান রাইটস বলেছে, বিক্ষোভের সময় কারগারটির দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যরা বিক্ষোভকারী নারীদের মারধর করেছেন। এমনকি, গুলিও চালান তারা।
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2023/09/17/iraan-in.jpg)
সংবাদ সংস্থা ইরনা বলেছে, ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা আসামিরা তাদের পোশাকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর কোয়ারচাক কারাগারের একটি ওয়ার্ডে আগুন লাগে। তবে, তাৎক্ষণিক আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। এতে কেউ হতাহত হয়নি।