রাজধানীতে ডিএমপির ইভটিজিংবিরোধী টিম
পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে নারী উত্ত্যক্তের ঘটনা রুখতে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ইভটিজিংবিরোধী বিশেষ টিম। ফোন পেলেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এই টিম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
ডিএমপির সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) সুমন কান্তি চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করছে ইভটিজিংবিরোধী টিম। এ টিমের সদস্যরা ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালন করছেন।
সুমন কান্তি চৌধুরী আরো জানান, এবারের বৈশাখী অনুষ্ঠানে নারীঘটিত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য ডিএমপির ইভটিজিংবিরোধী বিশেষ টিম কাজ করছে। যেকোনো ধরনের ঘটনা বা কাউকে ইভটিজিংয়ের সঙ্গে জড়িত মনে হলেই ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।
যদি কোনো নারী হয়রানির শিকার হন, তবে তিনি দ্রুত পুলিশ কন্ট্রোল রুমে এসে অভিযোগ জানাতে পারবেন। তা সম্ভব না হলে ডিএমপির কন্ট্রোল রুমের মুঠোফোন নম্বরে ফোন করে জানানো যাবে। ফোনে ঘটনার তথ্য দিলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হবে বলে উল্লেখ করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিশেষ টিমের কথা জানিয়েছিলেন ডিএমপির কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
এদিকে আজ সকাল থেকে রমনা, শাহবাগ ও টিএসসি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নানা রকমের তৎপরতা। প্রতিবছরের মতো এবারও রমনা বটমূলে সকালে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এ অনুষ্ঠান ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মঙ্গল শোভাযাত্রা চলাকালেও পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো।
রমনা এলাকায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আসিফ আকরাম নামের একজন বলেন, ‘দেশে কিছুদিন থেকে জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গি আস্তানার যেসব চিত্র আমরা দেখতে পেয়েছি, তাতে আজ বাসা থেকে বের হতে প্রথমে একটু ভয় হচ্ছিল। কিন্তু রাস্তায় নামার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখে সে ভয় সত্যি কেটে গেছে। পুলিশ নিজের হাতে খাবার পানি, বাতাসা বিতরণ করছে দেখে অনেক ভালো লাগল।’
তানিয়া নামের এক নারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এবার বৈশাখে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তাবলয় দেখে মুগ্ধ হয়েছি। মনে হচ্ছে, তারা আজ পুলিশ বা র্যাব নয়, বরং আমাদের বন্ধু।’
রমনা পার্ক, শাহবাগ, টিএসসিসহ বেশ কিছু স্থানে র্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বসানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রবেশপথে সবাইকে তল্লাশি করা হচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আর সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সবার চলাফেরায় নজর রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রস্তুত আছে বোম ডিসপোজাল ইউনিট, সোয়াট ও পুলিশের বিশেষ দল।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার মো. এহসানুল ফেরদাউস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে এবারও প্রতিবারের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে পুলিশের পক্ষ থেকে আগে থেকেই বিশেষ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আমরা আশা করছি, সুস্থ এবং সুশৃঙ্খলভাবেই এবারের বৈশাখ পালিত হবে।’