মাদকাসক্ত ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/06/15/photo-1434390319.jpg)
মাদকাসক্ত ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে এক মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ কেদারপুর গ্রামে গতকাল রোববার ওই ঘটনা ঘটে।
নিহত ছেলের নাম জাকির মাদবর (২৫)। গ্রেপ্তার হওয়া মায়ের নাম সালেহা বেগম (৫০)। পুলিশ জাকিরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ বিষয়ে নড়িয়া থানায় সালেহা বেগমকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
নড়িয়া থানার পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নড়িয়ার দক্ষিণ কেদারপুর গ্রামের সিরাজ মাদবর ও সালেহা বেগম দম্পত্তির চার ছেলে ও দুই মেয়ে। চার বছর আগে সালেহার স্বামী সিরাজ মাদবর মারা যান। তাঁদের ছেলে জাকির অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারে সদস্যরা তাকে সুস্থ করতে কয়েক দফায় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসা করেন। ২০০৯ সালে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানো হয়। কিছুদিন থাকার পর বাংলাদেশে ফিরে পুনরায় সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর পরিবারের সদস্যরা তাকে ওমানে পাঠান। মাদক ছাড়তে না পেরে সেখান থেকেও বাড়ি ফিরে আসে সে।
মাদকাসক্ত ছেলেকে সঠিক পথে আনতে মা সালেহা বেগম আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে সংশোধনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে একবার পুলিশেও ধরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছেলের কোনো পরিবর্তন হয়নি। উপরন্তু বিভিন্ন সময় মাদকের টাকার জন্য মাকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগসহ মাঝেমধ্যে মারধর করত জাকির। কিছু দিন আগে জাকির তাঁর ছোট ভাই একরামকেও মাদকের টাকা না দেওয়ায় হত্যার হুমকি দেয়।
সালেহা বেগমের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মাদক গ্রহণ করে রোববার ভোররাত ৪টার দিকে জাকির ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সালেহা বেগম কক্ষের জানালা দরজা বন্ধ করে ঘুমন্ত জাকিরের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে কক্ষটি তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরের দিন বিকেলে বাড়ির লোকজন ব্যাপারটি টের পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে নড়িয়া থানার পুলিশ জাকিরের মরদেহ উদ্ধার করে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম আলী মিয়া বলেন, নিহত জাকির মাদবর মাদকাসক্ত ছিল। মাদকের টাকার জন্য পরিবারের সদস্যদের মারধর করত। টাকার জন্য সে ছোট ভাইকে হত্যার হুমকি দিলে তার মা তাকে হত্যা করেন। সালেহা বেগম তাঁর সন্তানকে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হত্যার ঘটনায় জাকিরের বড় বোন মুক্তা বেগম বাদী হয়ে মা সালেহা বেগমকে আসামি করে মামলা করেছেন।