বিমার প্রভাবে সূচকের উত্থান, বছরের সেরা লেনদেন আজ

ব্যাংক খাত হোঁচট খেলেও বিমার প্রতিষ্ঠানের প্রভাবে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব ধরনের ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর)। এদিন বস্ত্র, প্রকৌশল ও নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানও সূচক উত্থানে সহায়তা করেছে। এদের ইতিবাচক প্রভাবে এদিন প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২১ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। এদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া ৬২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। এদিন লেনদেন বেড়ে এক হাজার ৪৪১ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করেছে, যা গত ১২ মাস ২৭ দিন বা ২৪৭ কর্মদিবসের মধ্যে সেরা লেনদেন। তবে আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ বাজারে মূলধনের পরিমাণ কমেছে ৬৮৯ কোটি টাকা।
অন্যান্য খাতের কোম্পানির তুলনায় ব্যাংক, নন ব্যাংকিং আর্থিক, বিমা, প্রকৌশল, ওযুধ রসায়ন ও বস্ত্র প্রতিষ্ঠানের মূলধন ও শেয়ার সংখ্যা বেশি। এসব খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার যেদিন দর বাড়ে, সেইদিন পুঁজিবাজার উত্থানে থাকে। সেই হিসেবে আজ ব্যাংক ও ওযুধ রসায়ন বাদে বাকি চার খাত ভালো করেছে। এ ছাড়া মিউচুয়াল ফান্ড, জ্বালানি শক্তি, সিমেন্ট ও সিরামিক খাতগুলোর অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে এদিন। তারই প্রভাবে আজ ডিএসইতে সব ধরনের সূচকের উত্থান দেখা দিয়েছে।
আজ মিউচুয়াল ফান্ড খাতের ৩৭টির মধ্যে ৩৫টি বা ৯৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। বিমা খাতের ৫৮টির মধ্যে আজ ৫৪টি বা ৯৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। সিমেন্ট খাতের সাতটির মধ্যে ছয়টি বা ৮৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। সিরামিক খাতের পাঁচটির মধ্যে চারটি বা ৮০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতের ২৩টির মধ্যে ১৭টি বা ৭৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। বস্ত্র খাতের ৫৮টির মধ্যে ৪২টি বা ৭২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। প্রকৌশল খাতের ৪২টির মধ্যে ২৯টি বা ৬৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। এ ছাড়া জ্বালানি শক্তি খাতের ২৩টির মধ্যে ১৬টি বা ৭০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। এ ছাড়া ভ্রমণ ও অবসর খাতের ৬৬ শতাংশ টেলিযোগাযোগ খাতের ৬৬ শতাংশ এবং পাট খাতের ৬৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর এদিন উত্থান হয়েছে। তবে আজ ব্যাংক খাতের ৩৬টির মধ্যে ৩০টি বা ৮৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে।
ডিএসইতে শেয়ার কেনার চাপে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ১০ মিনিটে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উত্থান হয় ৩৩ পয়েন্ট। বেলা বাড়ার পর শেয়ার কেনার চাপের গতি কমে আসে। লেনদেন শেষে এদিন সূচক ডিএসইএক্স উত্থান হয় ২১ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। সূচকটি বেড়ে দিনশেষে দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ৬৩৬ দশমিক ১৫ পয়েন্টে। এদিন ডিএস-৩০ সূচক পাঁচ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৮৮ দশমিক ১০ পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএসইএস সূচক শূন্য দশমিক ৬১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২২৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে।
আজ লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৩৩১ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার। এর আগে গত বছরের ১১ আগস্ট লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ১০ কোটি আট লাখ টাকা। এরপর গত ১২ মাস ২৭ দিন বা ২৪৭ কার্যদিবসের মধ্যে সেরা আজকের এই লেনদেন।
আজ ডিএসইতে মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ২৭ হাজার ১০৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা। গত বৃহস্পতিবার মূলধন ছিল সাত লাখ ২৭ হাজার ৭৯২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আজ লেনদেন হওয়া ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ২৪৮টির এবং কমেছে ১২৭টির। শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির।
আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে রবি আজিয়াটার শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৭ কোটি আট লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৩৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, খান ব্রাদার্সের ৩৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ২২ কোটি ২৭ লাখ টাকা, লাভেলো আইসক্রিমের ২২ কোটি ২৭ লাখ টাকা, সোনার বাংলার ২২ কোটি টাকা এবং সিটি ব্যাংকের ২১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আজ দর কমার শীর্ষে উঠে এসেছে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির দর কমেছে আট দশমিক ৯৬ শতাংশ। এদিন দর বাড়ার শীর্ষে উঠে এসেছে রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।