ম্যারাডোনা ভক্তদের আটকাতে পারল না পুলিশও
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/11/27/1.jpg)
প্রিয় তারকার শেষ বিদায়। কিছুতেই যেতে দিতে রাজি নন দিয়েগো ম্যারাডোনার ভক্তরা। বিদায় যে দিতে হবে, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু ম্যারাডোনার প্রতি ভালোবাসা কি আর নিয়ম মানে। কিংবদন্তির শেষ বিদায়ে ভক্তদের থামাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে। এমনকি ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে আর্জেন্টাইন পুলিশের। ফুটবল ভিত্তিক ওয়েবসাইট গোল ডটকমে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা। পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও বন্ধুদের উপস্থিতিতে সম্পন্ন করা হয় ম্যারাডোনার শেষকৃত্যানুষ্ঠান। বুয়েনস আইরেসের উপকণ্ঠে বেলা ভিস্তায় স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মা-বাবার পাশেই সমাহিত করা হয় ফুটবল জাদুকরকে।
ম্যারাডোনার বিদায়ক্ষণে মানুষের ঢল নেমেছিল কাসা রোসাদায়। সেখানে ম্যারাডোনাকে শ্রদ্ধা জানাতে ১০ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। কিন্তু এই সময়ে এত মানুষের চাপ সামলাতে পারেনি পুলিশ। একপর্যয়ে ঝামেলা বেধে যায়।
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘ক্লারিন’ ও সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ভক্তদের উত্তেজনা প্রশমনে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2020/11/27/2.jpg 687w)
এর আগে মৃত্যুর পরই গত বুধবার সন্ধ্যায় ম্যারাডোনার মরদেহ বুয়েনস আইরেসের তিগ্রেতে তাঁর বাসভবন থেকে ময়নাতদন্তের জন্য সান ফার্নান্দোর একটি মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েনস আইরেস প্রদেশের লানুস শহরে জন্মগ্রহণ করেন ম্যারাডোনা। দক্ষিণ প্রান্তের শহর ভিয়া ফিওরিতোতে তাঁর বেড়ে ওঠা। তিন কন্যা সন্তানের পর তিনিই ছিলেন মা-বাবার প্রথম পুত্রসন্তান।
শৈল্পিক ফুটবল দিয়ে কিশোর বয়সেই নজর কাড়েন ম্যারাডোনা। মাত্র আট বছর বয়সে যোগ দেন আর্জেন্টিনার যুব দলে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
১৯৭৭ সালে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে ডাক পান ম্যারাডোনা। এরপর দেশের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ আসরে অংশ নেন। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৮৬ সালে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। তবে ওই বিশ্বকাপে তাঁর প্রথম গোলটি ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত। দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে অবশ্য সমস্যা হয়নি। প্রায় ৬০ মিটার দূর থেকে প্রতিপক্ষের পাঁচ ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে দ্বিতীয় গোল করেন ম্যারাডোনা। ওই গোলটিকে ২০০২ সালে ফিফা ডটকমের ভোটাররা শতাব্দীর সেরা গোল হিসেবে নির্বাচিত করে।
১৯৯০ সালের বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন ম্যারাডোনা। তবে সেবার আর বিশ্বকাপ ছোঁয়া হয়নি। পরের বছর ইতালিতে ড্রাগ টেস্টে কোকেইনের জন্য ধরা পড়ায় ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হন তিনি। এরপর মাঠে ফিরে আর ছন্দ খুঁজে পাননি ম্যারাডোনা। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৭ সালে বুটজোড়া তুলে রাখেন ম্যারাডোনা।