শততম টেস্টে শতভাগই দিলেন মুশফিকরা

সাদা পোশাকে মাঠে নেমে জয়ের উল্লাসে মেতে উঠতে খুব কমই দেখা গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। শততম টেস্ট খেলতে নামার আগে মাত্র আটবার এসেছে এমন মুহূর্ত। শ্রীলঙ্কা সফরের প্রথম টেস্টেও ২৫৯ রানের বড় ব্যবধানে হারের পর খুব বেশি আশা হয়তো কেউই করেননি মুশফিক-সাকিবদের নিয়ে। কিন্তু শততম টেস্টে যেন নিজেদের শতভাগই উজাড় করে দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। খেললেন নিজেদের সেরা খেলাটাই। ফলাফল: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়। যেখানে মিশে থাকল শততম টেস্টের মাইলফলকগড়া ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখার যাবতীয় উপাদানই।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চার উইকেটের ইতিহাসগড়া এই জয়টি এসেছে অসাধারণ দলীয় সমন্বয়ের ফসল হিসেবে। দুই ইনিংসেই দারুণ ব্যাটিং করে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন তামিম ইকবাল। কিন্তু প্রতিটি ক্রিকেটারেরই অবদান আছে দলের এই অসাধারণ জয়ে। যখন যার প্রয়োজন, তখনই তিনি জ্বলে উঠেছেন দারুণভাবে।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে আটজনই করেছেন ২০-এর বেশি রান। অর্ধশতক আছে চারটি। তামিম মাত্র এক রানের জন্য ছুঁতে পারেননি ৫০ রানের ফিগার। অভিষেকেই ৭৫ রানের ইনিংস খেলে নজর কেড়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। আর সাকিব খেলেছেন দলীয় সর্বোচ্চ, ১১৬ রানের ইনিংস।
প্রথম ইনিংসে বল হাতেও সবাই জ্বলে উঠেছিলেন একসঙ্গে। নিয়মিত পাঁচ বোলারই শ্রীলঙ্কার উইকেটগুলো ভাগাভাগি করে নিয়েছেন নিজেদের মধ্যে। তিনটি উইকেট পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুটি করে উইকেট গেছে সাকিব, শুভাশীষ ও মুস্তাফিজের ঝুলিতে। একটি উইকেট পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত হাত ঘুরিয়েছেন মাত্র চার ওভার। কোনো উইকেট নেই শুধু তাঁর ঝুলিতেই।
বোলিংয়ের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ইনিংসেও দেখা গেছে প্রায় একই চিত্র। এবার পাঁচ বোলারের মধ্যে উইকেট পাননি শুধু শুভাশীষ। সাকিব পেয়েছেন চারটি উইকেট। আর দুর্দান্ত এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের পথে অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মিরাজ ও তাইজুল।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়ের চিত্রনাট্যটা লিখেছেন তামিম ও সাব্বির। অষ্টম ওভারে টানা দুই বলে সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস সাজঘরে ফেরার পর তৃতীয় উইকেটে তামিম-সাব্বির গড়েছিলেন ১০৯ রানের জুটি। ৮২ রান করে তামিম যখন সাজঘরের পথে হাঁটছিলেন, তখন প্রায় নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের জয়। শেষ কাজটুকু অনায়াসেই সেরে ফেলেছেন মুশফিক-সৈকতরা।
শততম টেস্টের জয়টা নিশ্চিতভাবেই দীর্ঘদিন গেঁথে থাকবে বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে। কেউ যদি স্কোরবোর্ডটাও বাঁধিয়ে রাখেন, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এমন অসাধারণ দলীয় সমন্বয়ের উদাহরণ যে খুবই কম দেখা যায়।