ভারত -ইংল্যান্ড পারেনি, করে দেখাল বাংলাদেশ

শততম টেস্ট জয় দিয়ে স্মরণীয় করে রাখতে কে না চায়। কিন্তু সবার ভাগ্যে জোটেনা এই বিরল সুযোগ। যেমন জোটেনি ভারত বা ইংল্যান্ডের ভাগ্যে। কিন্তু ভারত-ইংল্যান্ডের মতো দলগুলো যেটা পারেনি, সেটাই করে দেখাল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শততম টেস্ট খেলতে নেমে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেন মুশফিক-তামিমরা।
শততম টেস্টে এল বাংলাদেশের নবম জয়। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি মাত্র টেস্টে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো শ্রীলঙ্কার নাম।
নিজেদের শততম টেস্টে এর আগে জয় পেয়েছিল কেবল অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান। এবার মর্যাদার সেই বোর্ডে নাম তুলল বাংলাদেশও। ১৯১২ সালে অস্ট্রেলিয়া তাদের শততম টেস্টে ৭০ রানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ডকে। ১৯৬৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের শততম টেস্টে হারায় অস্ট্রেলিয়াকে। আর ১৯৭৯ সালে পাকিস্তান তাদের শততম টেস্টে হারায় অসিদের।
নিজেদের শততম টেস্টে ভারত হেরেছে ইংল্যান্ডের কাছে, নিউজিল্যান্ড হেরেছে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে। ইংলিশরা হেরেছে অসিদের কাছে। আর শততম টেস্টে বাংলাদেশ কলম্বোয় রচনা করল লঙ্কা বধের কাব্য। এই জয়ে জিম্বাবুয়ের আরও কাছে চলে এল বাংলাদেশ।
টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ৯৮৩টি টেস্ট খেলে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি ইংল্যান্ডের। ৮০০টি টেস্ট খেলে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৫২০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারত ৫০৮, নিউজিল্যান্ড ৪২১, দক্ষিণ আফ্রিকা ৪১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। প্রোটিয়াদের চেয়ে তিনটি টেস্ট কম ম্যাচ কম খেলেছে পাকিস্তান। ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ী শ্রীলংকা খেলেছে ২৫৮টি টেস্ট। আর এখন পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে খেলেছে ১০১টি টেস্ট।
১০০ টেস্টে মাত্র ৯ জয় নিয়ে জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যানে সবার পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জয়ের হার মাত্র ৯ শতাংশ। এই তালিকায় বাংলাদেশের চেয়েও এগিয়ে আছে জিম্বাবুয়ে। ১০১ টেস্টে ১১ জয় আর ২৬টি ড্র করেছে জিম্বাবুয়ে (১০.৮৯ %)।
৩৭৭ জয় (৪৭.১২%) নিয়ে সবার ওপরে অস্ট্রেলিয়া। ৩৭.০৭ শতাংশ জয় নিয়ে অজিদের পেছনে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংল্যান্ডের জয় ৩৫ শতাংশ ম্যাচে। এরপরই রয়েছে পাকিস্তান ৩১.৯৪%, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩১.৭৩ শতাংশ, শ্রীলংকা ৩১.৩৯ শতাংশ। ভারতের জয় ২৭ শতাংশ ম্যাচে। নিউজিল্যান্ড জিতেছে ২১.১৪ শতাংশ ম্যাচে।
শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার আগে মুশফিকুর রহিম বারবারই বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কাকে হারানোর এটাই সেরা সুযোগ। কাঙ্ক্ষিত সেই জয়টা যে শততম টেস্টেই আসবে সেটা বোধ হয় ভাবেননি মুশফিকও। গলে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় প্রথম টেস্ট হারের পর কলম্বোতে ঘুরে দাঁড়ায় তামিম-সাকিবরা।
প্রথম ইনিংসে সাকিব আল হাসানের শতকে ৪৬৭ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। সেই ইনিংসে সাকিবকে পূর্ণ সাহচর্য্য দিয়ে যান সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও তামিম ইকবাল। আর ১৯১ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তামিম একাই করলেন ৮২, আর দ্বিতীয় ইনিংসে তামিমকে সঙ্গ দিয়ে যান সাব্বির রহমান। ব্যাটসম্যানদের ম্যাচে বাংলাদেশ জিতল ৪ উইকেটে।
এ বছর আরও বেশ কয়েকটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। টাইগারদের জয়ের রেকর্ডটা যে আরও সমৃদ্ধ সে কথা বলাই তো বাহুল্য।