জয়ের সুবাস নিয়ে শেষ দিনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনে আজ শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য দেয় স্বাগতিকরা। রান তাড়া করতে নেমে দিন শেষে কিউইদের সংগ্রহ ৪৯ ওভারে সাত উইকেটে ১১৩ রান। ম্যাচটি নিজেদের করে নিতে পঞ্চম দিনে আগামীকাল শনিবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের প্রয়োজন তিন উইকেট। যেখানে কিউইদের লাগবে ২১৯ রান। আপাত দৃষ্টিতে এই ম্যাচে তাদের ফেরা প্রায় অসম্ভব।
সিলেট টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে আজ ১০০.৪ ওভারে ৩৩৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। লিড পায় ৩৩১ রানের। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৩৩২ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে এলোমেলো হয়ে পড়ে কিউইরা। ৩০ রান তুলতেই তিন উইকেটের পতন ঘটে। দ্বিতীয় সেশন শেষ করে ১৭ ওভারে তিন উইকেটে ৩৭ রান নিয়ে।
বাংলাদেশকে প্রথম ওভারেই সাফল্য এনে দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ফেরান ওপেনার টম লাথামকে। রানের খাতা খোলার আগেই উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। প্রথম ইনিংসে কিউইদের হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন কেন উইলিয়ামসন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে থামতে হয় ১১ রানে। তাইজুল ইসলামের স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে লেগ বিফোর হন উইলিয়ামসন। বাংলাদেশ পায় দ্বিতীয় সাফল্যের দেখা।
দলীয় ৩০ রানে আবারও বাংলাদেশের আঘাত। এবার দৃশ্যপটে মেহেদী হাসান মিরাজ। শর্ট ফাইন লেগে নাঈম হাসানের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন হেনরি নিকোলসকে। দুই রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। বিপর্যয়ে পড়া কিউইদের হয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন ডেভন কনওয়ে ও ডেরিল মিচেল। তবে, শেষ সেশনের শুরুতেও বল হাতে দাপট দেখান তাইজুল ইসলাম-নাঈম হাসানরা। ডেভন কনওয়েকে শাহাদাত হোসেন দিপুর অসাধারণ ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তাইজুল। কনওয়ের ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। এরপর টম ব্লান্ডেলকে উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানিয়ে এবং কাইল জেমিসনকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরের পথ দেখান তাইজুল। তার স্পিন বিষে নীল হওয়া কিউইরা ১০২ রানে হারায় সাত উইকেট।
কিউইদের আশার বাতিঘর হয়ে ক্রিজে আছেন ডেরিল মিচেল। ৪৪ রানে অপরাজিত থেকে কাল সকাল শুরু করবেন তিনি। তার সঙ্গে আছেন টেলএন্ডার ইশ সোধি।
ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে ৪০ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন তাইজুল ইসলাম। একটি করে উইকেট পান নাঈম, মিরাজ ও শরীফুল।
এর আগে বেশ ভালো অবস্থানে থেকে চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। সেখান থেকে দিনের শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট হারায় দ্রুতই। তিন উইকেটে ২১২ রান নিয়ে সকাল শুরুর পর ২১৪ রানে শান্তকে হারায় বাংলাদেশ। শান্তর পর ১৮ রান করে ইশ সোধির বলে লেগ বিফোর হন শাহাদাত হোসেন দিপু। ২৪৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ক্রিজে থাকা মুশফিকুর রহিম নিজের সংগ্রহ বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন। ৬৭ রান করে থামতে হয় তাকে। আজাজ প্যাটেলের বলে তিনিও লেগ বিফোর হন। সপ্তম ব্যাটার হিসেবে গ্লেন ফিলিপসের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নুরুল হাসান সোহান। ১০ রান করেন তিনি। বাকিটা পথ বাংলাদেশকে টেনে নেন মিরাজ। ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ অলআউট হয় ৩৩৮ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রথম ইনিংস বাংলাদেশ : ৮৫.১ ওভারে ৩১০/১০
প্রথম ইনিংস নিউজিল্যান্ড : ১০১.৫ ওভারে ৩১৭/১০
দ্বিতীয় ইনিংস বাংলাদেশ : ১০০.৪ ওভারে ৩৩৮/১০। (জয় ৮, জাকির ১৭, শান্ত ১০৫, মমিনুল ৪০, মুশফিক ৬৭, দিপু ১৮, মিরাজ ৫০*, সোহান ১০, নাঈম ৪, তাইজুল ০, শরিফুল ১০; সাউদি ১৫-৩-৩৩-১, জেমিসন ১৩-৩-২৫-০, প্যাটেল ৩৬.৪-১-১৪৮-৪, ফিলিপস ১৬-৪-৪৭-১, সোধি ১৯-২-৭৪-২, মিচেল ১-০-২-০)
দ্বিতীয় ইনিংস নিউজিল্যান্ড : ৪৯ ওভারে ১১৩/৭*। (লাথাম ০, কনওয়ে ২২, উইলিয়ামসন ১১, নিকোলস ২, মিচেল ৪৪*, টম ৬, ফিলিপস ১২, জেমিসন ৯, সোধি ৭*; শরিফুল ৬-২-১৩-১, মিরাজ ১১-৩-৩১-১, তাইজুল ২০-৭-৪০-৪, নাঈম ১০-১-২৪-১, মমিনুল ২-০-৫-০)