সম্ভাবনার দুয়ার খুলে শেষ হলো প্রবাসীদের ট্রায়াল

বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন উন্মাদনার হাওয়া বয়ে গেছে দেশ ছেড়ে দেশের বাইরেও। এক চিলতে হাওয়া গিয়ে লেগেছে প্রবাসে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি বংশদ্ভূত তরুণ ফুটবলারদের গায়ে। তাইতো লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর তীব্র আকাঙ্খা নিয়ে অনেকেই ছুটে এসেছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ডাকে। নেমেছিলেন নিজেকে প্রমাণ করার অগ্নি পরীক্ষায়।
বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী ফুটবলারদের পরখ করতে বাফুফে আয়োজন করেছিল ‘বাফুফে নেক্সট গ্লোবাল স্টার’ ট্রায়ালের। তিন দিনের ট্রায়ালের আজ সোমবার (৩০ জুন) ছিল শেষ। এই দিনে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে দুটি ম্যাচ খেলেছে ১৪ দেশ থেকে আসা ৪৮ ফুটবলার। নিজেকে সেরা প্রমাণের মঞ্চে অবশ্য কোনো দলই হারাতে পারেনি কাউকে। দুটি ম্যাচই শেষ হয়েছে ‘নিষ্পত্তিহীন’ ভাবে।
তবে ম্যাচের ফলাফলের হিসেবের বাইরে ছিল দেশের ফুটবলের নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন। আগামীর স্টার কিংবা সুপারস্টারের পথচলা শুরুর গল্প। বাফুফে জানিয়েছে, আপাতত তাদের জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা হবে না। তবে কে জানে অদূর ভবিষ্যতে হামজা চৌধুরীর-শমিত সোম, ফাহমিদুল ইসলাম কিংবা কিউবা মিচেলদের সঙ্গে জুটি বেধে কাপন ধরাবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স লাইনে। অথবা প্রতিপক্ষের আক্রমণ করাকে নস্মাৎ করে দেবে চোখের পলকে।
সকালে প্রথম ম্যাচে দুই দলে ভাগ হয়ে মাঠে অনুর্ধ্ব-১৯ তরুণ ফটুবলাররা। ইউরোপের আধুনিক ফুটবলে বেড়ে ওঠা এই তরুণদের মধ্যে অসামান্য প্রতিভা, ট্যাকটিক্স আর দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষুধা দেখা গিয়েছে। একপাশে ছিল নিখুঁত পাসিং আর বল কন্ট্রোল, অন্যপাশে ক্ষিপ্রতা আর ব্যক্তিগত মুনশিয়ানা। যদিও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ড্র হয়েছে ২-২ গোলে।
বিকেলে মাঠে নামেন জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়রা। বয়সে অভিজ্ঞ এই ফুটলারদের খেলায় দেখা গেছে অভিজ্ঞাতার ছাপ। শারীরিক কসরতেও এগিয়ে ছিলেন তরুণদের থেকে। এ ম্যাচে অবশ্য কোনো গোল হয়নি। তবে গোল না হলেও এই ম্যাচে উঠে এসেছে কিছু ট্যাকটিক্যাল সম্ভাবনা- কেউ খেলেছেন উইং থেকে গতি এনে, কেউ মিডফিল্ডে ছন্দ তৈরি করে নজড় কেড়েছেন।
বল কন্ট্রোল, পজিশনিং, ক্ষিপ্রতা আর শরীরী ভাষায় ফুটবলের আধুনিক রূপ ফুটিয়ে তোলেন তারা। বিশেষ করে মিডফিল্ডে রিদম সেট করে খেলা নিয়ন্ত্রণ, উইং থেকে গতিময় আক্রমণ এবং কিছু খেলোয়াড়ের ফিনিশিং স্কিলে ফুটে উঠেছে পেশাদারিত্বের ছাপ।
ট্রায়ালে ১৪ দেশ থেকে অংশগ্রহণ করেছিল ৪৮ জন ফুটবলার। যাদের সবার বয়স ছিল ১৪ থেকে ২৭ বছর। ট্রায়ালে সবচেয়ে বেশি ফুটবলার অংশ নিয়েছিলেন ফুটবলের আঁতুড়ঘর খ্যাত ইংল্যান্ড থেকে। ইংলিশ ভূমি থেকে এসেছিলেন ২০ জন ফুটবলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ জন ফুটবলার এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সুইডেন থেকে পাঁচজন এবং দুই ফুটবলার এসেছিলেন কানাডা থেকে। এ ছাড়া ইতালি, বেলজিয়াম, ওয়েলস, ফিনল্যান্ড, মালয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়া- এই ১১টি দেশ থেকে একজন করে ফুটবলার এসেছেন ট্রায়ালের জন্য।