ভণ্ডামি ও পক্ষপাতের অভিযোগ এনে টুর্নামেন্ট বয়কট পাকিস্তানের

ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক বৈরিতার প্রভাব ক্রীড়া জগতে বেশ প্রভাব ফেলেছে দীর্ঘদিন ধরে। দুই দল দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হওয়া থেকে বিরত রয়েছে এক যুগ। তবে নিজেদের দেশের বাইরে কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিতে সেইভাবে বাধা পেতে হয়নি এতদিন। কিন্তু সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এই জায়গাতেও বাধার সৃষ্টি হয়েছে।
সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে আয়োজিত টুর্নামেন্ট ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন অব লেজেন্ডসে (ডাব্লিউসিএল) দেখা গেছে ভারত-পাকিস্তানের বৈরিতা। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই অংশ নিতে আপত্তি জানিয়েছে ভারত। এর মাঝে একটি ম্যাচ ছিল সেমিফাইনাল। টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিতে মাঠে নামা হয়নি পাকিস্তানের।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্টে রানার্সআপ হওয়া পাকিস্তান এবার কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টুর্নামেন্টে নিজেদের খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ একেবারে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
পিসিবি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ভারতের ম্যাচ বাতিলের এই সিদ্ধান্ত ক্রিকেটীয় কোনো কারণে নয় বরং একটি নির্দিষ্ট জাতীয়তাবাদী ধারণাকে খুশি করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে একটি অগ্রহণযোগ্য বার্তা পৌঁছে দেয়। তবে আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের এমন কোনো টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের অনুমতি দিতে পারি না, যেখানে খেলার মূল চেতনা বিকৃত রাজনীতির কারণে ঢাকা পড়ে যায় এবং যা খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা ও ‘জেন্টলম্যানস গেম’-এর মূল ধারণাকে ক্ষুণ্ন করে।’
টুর্নামেন্টের আয়োজকদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে পিসিবি। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত মাঠে নামতে না চাইলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করা হয়। এরপর সেমিফাইনালে একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পাকিস্তান সরাসরি ফাইনালে চলে যায়। এই বিষয়টি নিয়ে পিসিবি বলছে, ‘ভণ্ডামি ও পক্ষপাতিত্বের ছাপ স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয় এখানে।’
পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৭৯তম বোর্ড অব গভর্নরস-এর বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বোর্ড অভিযোগ করেছে যে আয়োজকেরা ‘খেলার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা’ এই ধারণাটিকে ইচ্ছাকৃত ব্যবহার করেছে। তারা জানিয়েছে, আয়োজকরা রাজনৈতিক বিবেচনা ও বাণিজ্যিক স্বার্থকে ব্যবহার করে টুর্নামেন্টে প্রভাব ফেলছে।
এর আগে ভারতের প্রত্যাহারের পর ডাব্লিউসিএলের আয়োজকদের পক্ষ থেকে কারো অনুভূতিতে আঘাত লাগার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছিল।
পিসিবির বিবৃতিতে এই প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘আবেগে আঘাত লাগার জন্য ডাব্লিউসিএলের দুঃখপ্রকাশ যেমন হাস্যকর, তেমনি এটি পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নেয় যে বাতিলের সিদ্ধান্ত ক্রিকেটীয় কারণে নয় বরং একটি নির্দিষ্ট জাতীয়তাবাদী ধারণার চাপে নেওয়া হয়েছে।’