ক্যাপ্টেন ‘ফ্যান্টাস্টিক’ আফঈদা

চলতি বছর হুমকির মুখে পড়েছিল দেশের নারী ফুটবল। কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে অবসরের হুমকি দেন ১৫ নারী ফুটবলার। সেখানে ছিলেন তৎকালীন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনও। সেই অচলাবস্থা কাটিয়ে আবারও মাঠে ফেরে নারী ফুটবল। তবে, জাতীয় দলে আর ফেরা হয়নি সাবিনার।
সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় আফঈদা খন্দকারকে। দলের দায়িত্ব নিয়ে পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চটা বজায় রেখেছিলেন তিনি। দলকে গেঁথেছেন এক সূতোয়। বন্ধন করেছেন দৃঢ়। এনেছেন অনন্য সাফল্য, গড়েছেন ইতিহাস। নিজেকে প্রমাণ করেছেন ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক হিসেবে।
জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে আফঈদার প্রথম টুর্নামেন্ট ছিল এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাই। যেখানে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল র্যাঙ্কিংয়ে যোজন যোজন এগিয়ে থাকা সব দেশ। খেলাও ছিল প্রতিপক্ষের মাঠে। তবে কোনো কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশের সামনে।
মিয়ানমারে র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা স্বাগতিকদের হারিয়ে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছিল এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলা। আগে পরে গোল বন্যায় ভাসিয়েছিল বাহরাইন আর তুর্কমেনিস্তানকে।
বয়স কম হওয়ায় গত মাসে ঘরের মাঠে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের দলেও রাখা হয়েছিল আফঈদাকে। সে দলের অধিনায়কের বন্ধনীও উঠেছিল তার হাতে। পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েছিলেন শিরোপা।
একই দল নিয়ে এএফসি অনুর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানেও অধিনায়ক আফঈদা। লাওসে আরও একটি ইতিহাস রচিত হয়েছে তার অধীনে। প্রথমবার এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল।
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সাফল্যে ভাসছে দেশের নারী ফুটবল। যেখানেই দায়িত্ব পাচ্ছেন সাফল্য এনে দিচ্ছেন দলকে। বাংলাদেশ গড়ছে ইতিহাস। এই সাফল্যের পরে বোধহয় এ কথা বলা কোনোভাবেই অমূলক হবে না- ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক আফঈদা’।
অধিনায়কের সঙ্গে সঙ্গে রক্ষণও সামলেছেন দক্ষভাবে। র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দলগুলোকে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে খুব একটা গোলও হজম করতে হয়নি বাংলাদেশকে। যেখানে ডিফেন্ডার হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তিনি।