বাঁচা-মরার ম্যাচে মঙ্গলবার আফগান পরীক্ষা বাংলাদেশের

প্রথমবার এশিয়া কাপের শিরোপা ঘরে তোলার স্বপ্ন নিয়ে আরব আমিরাতের বিমান ধরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা ঠিক উল্টো। দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে এখন সুপার ফোরে খেলাই এক কঠিন চ্যালেঞ্জ লিটন দাসের দলের সামনে। সেই লক্ষ্য পূরণে শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প নেই। বাঁচা-মরার সেই ম্যাচে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মাঠে নামবে বাংলাদেশ। খেলাটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। সরাসরি দেখা যাবে নাগরিক টিভি আর টি-স্পোর্টসে। অনলাইনে টফি আর ট্যাপম্যাড অ্যাপে।
হংকংয়ের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাজেভাবে হারে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। গ্রুপ অব ডেথ হিসেবে পরিচিত ‘বি’ গ্রুপে সুপার ফোরের লড়াই এখন জমে উঠেছে। সেটা অবশ্য নির্ভর করছে বাংলাদেশের ওপর। যদি লিটন-মুস্তাফিজরা আফগানদের হারাতে পারে তাহলে সেই লড়াই আরও জমে উঠবে। নতুবা রাস্তা পরিষ্কার আফগানিস্তান আর শ্রীলঙ্কার।
সমীকরণ বলছে, আসরে ২ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট। সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখতে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। শ্রীলংকার মতো এক ম্যাচ খেলে পূর্ণ ২ পয়েন্ট পেয়েছে আফগানিস্তানও। নিজেদের প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে ৯৪ রানের বড় ব্যবধানে জয় পায় তারা। বাংলাদেশের কাছে হারলেও সুপার ফোরে খেলার সুযোগ থাকবে আফগানিস্তানের। তখন শেষ ম্যাচে শ্রীলংকাকে হারাতে হবে আফগানদের।
বাংলাদেশের চেয়ে অনেক পরে ক্রিকেটে হাতেখড়ি আফগানিস্তানের। কিন্তু সেই আফগানরা এখন এগিয়ে গেছে সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ দ্রুত। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টির মারকাটারি খেলায় বাংলাদেশের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে আফগানরা। বোলিংয়ে রশিদ খানের সঙ্গে নূর আহমেদ-গজনফাররা দুর্দান্ত করছেন। ব্যাটিংয়েও রহমানুল্লাহ গুরবাজের সঙ্গে সেদিকুল্লাহ অটলরা আস্থার প্রতিদান দিচ্ছে।
সুপার ফোরের সমীকরণ মেলানোর ম্যাচে তাই দুই বিভাগেই পরীক্ষা দিতে হবে বাংলাদেশকে। সেই পরীক্ষায় বাংলাদেশের অতীতও ভালো নয়। টি-টোয়েন্টিতে আফগানদের বিপক্ষে ১২ বার মুখোমুখি বাংলাদেশের জয় পাঁচটি, বাকি সাতটি ম্যাচেই জিতেছে রশিদ-নাবীরা। এশিয়ার মঞ্চেও পাঁচ দেখায় তিন জয় আফগানদের। ২০২২ সালে এশিয়া কাপে একমাত্র টি-টোয়েন্টির দেখায়ও ৭ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ।
বোলিং গত কয়েক বছর ধরেই যেকোনো দলের জন্য বেশ শক্ত প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটিং যেন ছন্নছাড়া। সিনিয়রদের বিদায়ের পর পুরো ব্যর্থ মিডল অর্ডার। দলের হাল ধরার মতো কেউ নেই। কালে-ভদ্রে হৃদয়রা এক ভালো খেললেও ফর্মহীনতায়ই কাটে বেশিরভাগ সময়। এমন অবস্থায় আফগান স্পিনারদের বিপক্ষে লড়াই করতে হবে তাওহিদ হৃদয়-লিটন দাসদের। সেই লড়াইয়ে সফল হলেই কেবল জয়ের আশা দেখা যাবে।
বাঁচা-মরার ম্যাচে অবশ্য কোনো পরিসংখ্যান কিংবা শক্তির বিচার নয়। জয়ই একমাত্র লক্ষ্য অধিনায়ক লিটন দাসের। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি এটি (আফগানিস্তানের বিপক্ষে) আমাদের জন্য বাঁচা-মরার ম্যাচ। আমরা ঘুরে দাঁড়াতে নিজেদের সেরাটা উজার করে দেবো।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্কোয়াডে একটি পরিবর্তন এনেছিল বাংলাদেশ। পেসার তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি শরিফুল। তাই এই ম্যাচ দিয়ে আবারও একাদশে ফিরতে পারেন তাসকিন। এছাড়াও তাওহিদ হৃদয়ের পরিবর্তে একাদশে দেথা যেতে পারে সাইফ হাসানকে।