শত বছরের তাজহাট জমিদারবাড়ি

শত বছরের কীর্তি রংপুরের তাজহাট জমিদারবাড়ি। কালের পরিক্রমায় আমাদের অনেক কীর্তি হারিয়ে গেলেও এখনো অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে তাজহাট জমিদারবাড়ি। শহর থেকে অল্প কিছু দূরেই এর অবস্থান। রিকশায় যেতে আধা ঘণ্টার মতো সময় লাগে। ছুটির দিনগুলোতে সহজেই ঘুরে আসতে পারেন শত বছরের রংপুরের তাজহাট জমিদারবাড়ি থেকে।
অবস্থান
তাজহাট জমিদারবাড়ি বাংলাদেশের রংপুর শহরের অদূরে তাজহাটে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদ, যা এখন জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। রংপুরের পর্যটকদের কাছে এটি একটি আকর্ষণীয় স্থান। রাজবাড়িটি রংপুর শহর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
যে কারণে বিখ্যাত
বিংশ শতাব্দীতে বৃহত্তর রংপুরের মাহিগঞ্জ তাজহাট এলাকায় প্রজাহিতৈষী জমিদার গোবিন্দ লাল রায়ের পুত্র গোপাল লাল রায়ের বাড়িটি প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের এক অপূর্ব নিদর্শন। প্রাসাদটি বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে তিনি নির্মাণ করেন। তিনি পেশায় ছিলেন একজন স্বর্ণকার। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি রাজা গোপাল প্রায় দুই হাজার রাজমিস্ত্রির সহায়তায় একটি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করেন। সেই বাড়িটিই বর্তমানে তাজহাট জমিদার বাড়ি হিসেবে সুপরিচিত।

যা যা দেখবেন
প্রাসাদে সংরক্ষিত রয়েছে বিভিন্ন হস্তলিপি, পুরোনো পত্রিকা, শিবপত্নী পার্বতীর মূর্তি, মাটির পাত্র, বিভিন্ন পোড়ামাটির ফলক, আগেকার রাজা-বাদশাহদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, মৃৎপাত্র, প্রজা বিদ্রোহের নেত্রী সরলা দেবীর ব্যবহৃত সেগুন কাঠের তৈরি বাক্স, মঙ্গলকোট/সীতাকোট (বগুড়া), মহাস্থানগড় থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন পোড়ামাটির ফলক। এ ছাড়া রয়েছে লোহার দ্রব্যাদি, সাঁওতালদের ব্যবহৃত তীর, লাল পাথরের টুকরো, পাহাড়পুর বিহার থেকে সংগৃহীত নারীমূর্তি, পাথরের নোড়া, বদনা, আক্রমণাত্মক যোদ্ধার মূর্তি। সাহিত্য পরিষদ রংপুরের সরবরাহ করা হাতের লেখা মহাভারত, রামায়ণ, চৈতন্য চরিতামৃত, শান্তি শতক, গাছের বাকলে লেখা সংস্কৃত হস্তলিপি, বেগম রোকেয়ার স্বহস্তে লেখা চিঠি, তুলট কাগজে লেখা হস্তলিপি, সম্রাট আওরঙ্গজেব, কবি শেখ সাদী ও বাদশাহ নাসির উদ্দিনের স্বহস্তে লেখা কোরআন শরিফ, ছোট্ট কোরআন শরিফও রয়েছে।

কীভাবে যাবেন
রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন পরিবহনের বাস যেকোনো সময় রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এসি, নন-এসি ভেদে প্রতি যাত্রীর ভাড়া পড়বে ৫৫০-১২০০ টাকা। তবে কুড়িগ্রামের বাসে উঠলে জাদুঘরের ঠিক সামনে নামা যায়। তা ছাড়া রংপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে জাদুঘর যেতে ২০ টাকা ভাড়ায় রিকশা পাওয়া যায়। আর অটোতে গেলে ১০ টাকা লাগে।