আফগানিস্তানে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানিতে জাতিসংঘের উদ্বেগ
আফগানিস্তানে সরকার ও সরকাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর চলমান যুদ্ধে প্রতিদিনই বাড়ছে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে বেসামরিক মানুষদের প্রাণহানির ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশটিতে বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের সংখ্যা ছিল নজিরবিহীন।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসে আফগানিস্তানে এক হাজার ৬৫৯ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময়ে আহত হয়েছেন আরও তিন হাজার ২৫৪ জন।
প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলেছে, ২০২০ সালের এই সময়ের তুলনায় এই সংখ্যা শতকরা ৪৭ ভাগ বেশি। হতাহতদের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এর মধ্যে শিশুই শতকরা ৩২ ভাগ। সংস্থাটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের শতকরা ৬৪ ভাগের ক্ষেত্রে সরকারবিরোধী বাহিনী দায়ী। এর মধ্যে ৩৯ ভাগ ঘটে তালেবানের হাতে, ২৩ ভাগ আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে, শতকরা ১৬ ভাগ অন্যান্য সরকারবিরোধী গোষ্ঠীর হাতে এবং উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী দায়েশের (আইএস) হাতে হতাহত হন শতকরা নয় ভাগ বেসামরিক আফগান নাগরিক। এ ছাড়া শতকরা ১৩ ভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটে সংঘর্ষরত পক্ষগুলোর ক্রসফায়ারের মধ্যে পড়ে।
আফগানিস্তানে একের পর এক শহর দখল করছে তালেবান। আফগান সরকার তালেবানের অগ্রগামিতা থামাতে সে দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে গত শনিবার অনির্দিষ্টকালের জন্য রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসলামী বিদ্রোহী গ্ৰুপ তালেবান দ্রুত যুদ্ধক্ষেত্রে সফল হয়ে আফগানিস্তানের প্রায় ৩৪টি প্রদেশের রাজধানীসহ দেশটির রাজধানী কাবুলের কাছে এসে পৌঁছেছে।
গত মে মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও জোটবাহিনী আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করলে, তালেবান ব্যাপক আগ্রাসী অভিযান শুরু করে।