করোনা প্রতিরোধের ওষুধ পাওয়া গেছে, দাবি অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের

অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের একটি দল দাবি করছে, তারা করোনাভাইরাস প্রতিরোধক খুঁজে পেয়েছে এবং গবেষকরা আশা করছেন, এ মাসের শেষের দিকে প্রতিরোধকটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য করোনায় আক্রান্তদের তালিকা করা হবে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম নিউজ ডটকম ডট এইউ আজ সোমবার এ খবর জানিয়েছে।
কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লিনিক্যাল রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক ডেভিড পিটারসন নিউজ ডটকম ডট এইউকে জানান, অন্য চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত দুটি ওষুধ টেস্টটিউবের মধ্যে করোনাভাইরাস নিশ্চিহ্ন করতে পারছে।
ডেভিড পিটারসন বলেন, ‘এরই মধ্যে একটি ওষুধ করোনায় আক্রান্ত কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলাফলে দেখা যায়, ভাইরাসটি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এবং ওই ব্যক্তিরা ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে গেছেন।
অধ্যাপক পিটারসন আরো বলেন, ‘ভাইরাসটি প্রতিরোধের জন্য সম্ভাব্য কার্যকর চিকিৎসা এটি এবং ওষুধগুলো অস্ট্রেলিয়ায় এরই মধ্যে নিবন্ধিত ও সহজলভ্য।’
পিটারসন বলেন, ‘আমরা এখন বৃহত্তরভাবে এই ওষুধ প্রয়োগ করতে চাই।’ এ ওষুধের ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি বলে জানান তিনি। পিটারসন আরো বলেন, ‘কোনো অনুমান থেকে নয়, বরং আমরা অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দিতে চাই।’
জানা গেছে, ওষুধ দুটির মধ্যে একটি এইচআইভির (এইডস রোগ) এবং অন্যটি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ—ক্লোরোকুইন। তবে ওষুধটি কম পরিমাণে ব্যবহার করা হয়।
এরই মধ্যে অস্ট্রলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫৩ জনে।
এদিকে অন্য দেশ থেকে আগতদের সবাইকে ১৪ দিনের ‘সেলফ আইসোলেশনে’ (স্বেচ্ছায় নিরুদ্ধ) থাকা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। গতকাল রোববার মধ্যরাতের পর যাঁরা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পা রেখেছেন, তাঁদের সবাইকে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে আইসোলেশনে থাকতে হবে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে পার্শ্ববর্তী দেশ নিউজিল্যান্ডও এমন আদেশ জারি করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন নতুন মন্ত্রিসভাকে করোনাভাইরাসবিরোধী যোদ্ধা মন্ত্রিসভা বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অস্ট্রেলিয়ায় আগমনেচ্ছু সবার জন্য সমানভাবে আইসোলেশন বাধ্যতামূলক করা হলো।’
এ ছাড়া আগামী ৩০ দিন কোনো দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ার বন্দরে যাত্রীবাহী জাহাজ ভেড়ানো যাবে না বলে ঘোষণা দেন স্কট মরিসন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
করোনার বিস্তার রোধে এর আগেই ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও চীনসহ বেশকিছু দেশ থেকে লোকজনের অস্ট্রেলিয়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এর আগে গত শনিবার নিউজিল্যান্ডও যেকোনো দেশ থেকে তাদের দেশে আগতদের সেলফ আইসোলেশন বাধ্যতামূলক এবং যাত্রীবাহী নৌজাহাজ ভেড়ানো নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়।
এদিকে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৫১১ জনে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজার ৩৩৮ জন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭৭ হাজার ৮৪ জন।
চীনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে এলেও বেশ কয়েক দিন থেকেই ইউরোপ রয়েছে আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে।