করোনা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা জারি ট্রাম্পের

করোনাভাইরাসের থাবা বেশ প্রকটভাবেই পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেইসঙ্গে করোনা সংক্রমণ রোধে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। এদিকে ট্রাম্প জরুরি অবস্থা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে স্পেনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।
হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে গতকাল ট্রাম্প জরুরি অবস্থার সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন। এ সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি সরকারিভাবে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছি। আগামী আট সপ্তাহ খুবই সংকটপূর্ণ। আমাদের অনেক কিছু শিখতে হবে। সেইসঙ্গে এই ভাইরাসকে আমাদের কোণঠাসা করতে হবে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি হাসপাতালকে নির্দেশ দিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্পের জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার ফলে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য সরকার ও অঞ্চলগুলোকে সহায়তার জন্য আপৎকালীন ত্রাণ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবেন ট্রাম্প। এ ছাড়া চিকিৎসা বিমার ওপরে আরোপিত নানা নিয়ম শিথিল এবং নতুন হাসপাতাল তৈরির পথ খুলে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৩৩ জনে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস-এর পরিচালক অ্যান্টনি ফসি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস গতকাল বলেছেন, চীন থেকে উৎপন্ন করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ মুহূর্তে মূল কেন্দ্রস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউরোপ। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইতালির। দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ২৬৬ জনের। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৫০ জনের, যা ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনের হিসাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর। এ ছাড়া দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৬৬০ জন।
এ ছাড়া আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে স্পেন, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে স্পেনে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রে সেনাবাহিনী নামানোর কোনো পরিকল্পনার কথা জানাননি ডোনাল্ড ট্রাম্প।