ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট ধারণার চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর : সিডিসির নথি
করোনাভাইরাসের ডেলটা ধরনটি জলবসন্তের মতই সহজে ও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং আগের ধরনগুলোর চেয়েও গুরুতর অসুস্থতার কারণ ঘটাচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের এক নথিতে উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) একটি অভ্যন্তরীণ নথির বরাতে ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ডেলটা ধরন টিকাপ্রাপ্ত এবং টিকাহীন সবার মাধ্যমেই প্রায় সমানভাবে ছড়াতে পারে।
সিডিসির অভ্যন্তরীণ একটি বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইডে এই নতুন তথ্য তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, কর্মকর্তাদের এটা স্বীকার করে নিতে হবে যে ‘লড়াইটা বদলে গেছে’।
সিডিসির ওই পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেনটেশনে নতুন যেসব উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছে, তা শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।
সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, জনগণকে টিকা নিতে, মাস্ক পরাতে, সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মানাতে এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করাতে যুক্তরাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক শীর্ষ এ সংস্থাকে কতটা বেগ পেতে হচ্ছে, তা উঠে এসেছে ওই প্রেজেন্টেশনে।
নতুন গবেষণার ফলের বরাত দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমেও ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট ছড়াতে পারে।
সিডিসির ওই নথিতে একটি জরুরি বার্তাও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, টিকা গ্রহণে উৎসাহিত করতে জনগণকে বার্তা পৌঁছানোর পদ্ধতি ঢেলে সাজাতে হবে, কারণ অতি সংক্রামক ডেলটা ধরনটি প্রায় নতুন একটি করোনাভাইরাসের মত আচরণ করছে, এ ধরনটি এমনকি ইবোলা বা সাধারণ সর্দি-জ্বরের ভাইরাসের চেয়েও দ্রুততায় একজন থেকে আরেকজনে ছড়াচ্ছে। আর এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে টিকা নেওয়ার কোনো বিকল্প আপাতত নেই।
ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সিএনএন কথা বলেছে সিডিসির পরিচালক ড. রোচেলি ভেলেনস্কির সঙ্গে, যিনি ওই নথির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি মানুষের এখন বোঝা দরকার যে আমরা এখানে মায়াকান্না কাঁদছি না। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের জানা অন্যতম অতিসংক্রামক একটি ভাইরাস এটা।’
সিডিসি পরিচালক সিএনএনকে বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মীসহ সবারই এখন মাস্ক পরা উচিত।
সিডিসির ওই প্রেজেন্টেশনের উপাত্ত বলছে, ডেল্টা ধরনটি জলবসন্তের মতোই সংক্রামক, যেখানে সংক্রমিত একজন মানুষ গড়ে আরও আট থেকে নয়জনকে সংক্রমিত করতে পারে। করোনাভাইরাসের মূল ধরনটি এতটা সংক্রামক ছিল না, সেটা ছিল অনেকটা সাধারণ সর্দি-জ্বরের ভাইরাসের মত, যেখানে একজন সংক্রমিত ব্যক্তি গড়ে আরও দুইজনকে সংক্রমিত করতে পারে।