দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতেও প্রবল বৃষ্টি, রেড অ্যালার্ট জারি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতে ভারি বৃষ্টিতে পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হওয়ায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে তিস্তা নদীর পানি।
সোমবার থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টি মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল। এদিন সন্ধ্যা থেকেই তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। পরে বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায়।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) বুধবারও জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। বুধবার সকালে দার্জিলিংয়ের অন্তত পাঁচটি এলাকা থেকে ভূমিধসের খবর আসে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা ও হিন্দুস্তান টাইমস।
গত দুই দিনে দার্জিলিংয়ে ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হয়েছে ২৩৩ মিলিমিটার। এর পাশাপাশি কালিম্পঙে ১৯৯, শিলিগুড়িতে ১৯৬ ও জলপাইগুড়িতে ১৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে মাটি আলগা হয়ে বহু জায়গায় ধস নেমেছে। এতে দার্জিলিংয়ের সঙ্গে বহু জায়গার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার জাতীয় সড়কে ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।

জলপাইগুড়ির দোমহনিতে নদীর পানি তিস্তা সেতু ছুঁইছুঁই করছে। গজলডোবায় তিস্তার বাঁধের স্লুইচ গেট উপচে পড়ছে পানি। স্থানীয় প্রশাসন বাধ্য হয়ে দফায় দফায় তিস্তা জলাধার থেকে পানি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
তাতে জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম ডুবে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) মোতায়েন করা হয়েছে।
তারা জলপাইগুড়ির চাঁপাডাঙা, পাতকাটা, সুকান্তনগর, নন্দনপুর, মৌয়ামারি, বোয়ালমারি, সারদাপল্লি মতো তলিয়ে যাওয়া এলাকাগুলো থেকে বহু মানুষকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধার পাওয়া লোকজনকে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
টানা দুই দিনের প্রবল বৃষ্টিতে কোচবিহারের নদীগুলোতেও পানি বেড়েছে। তোর্সা নদীর পানি বাড়ায় তীরবর্তী একটি বাজারসহ বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
কালিম্পং ও গ্যাংটকগামী জাতীয় মহাসড়কের কয়েকটি অংশ তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকতে বলা হয়েছে।
বুধবারও ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।